জিপি নিউজঃ মহা-পুলিশপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেছেন,বিশিষ্ট সাহিত্যিক ফরহাদ মজহার অপহৃত হননি, তিনি অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন।
এটি ছিল একটি কথিত অপহরন,সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে এই অপহরন নাটক উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পুলিশের তদন্ত ও তথ্য প্রমাণ এবং ভিডিও ফুটেজে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
একেএম শহীদুল হক আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।
পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো: মোখলেছুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশ(ডিএমপি) কমিশনার মো: আছাদুজ্জামান মিয়া, ডিআইজি পুলিশ সদর দফতর ড. মাহবুবুর রহমান, ডিআইজি প্রশাসন মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় ও গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো: আব্দুল বাতেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন,ফরহাদ মজহার সম্ভবত বাসে করে স্বেচ্ছায় খুলনা গিয়েছিলেন। অপহবণের খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারে আমরা সারাদেশের জেলা পুলিশকে মাইক্রোবাস তল্লাশী করতে চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু মাইক্রোবাসে তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে ওইদিন রাতে যশোরের সীমান্তবতী এলাকায় হানিফ কাউন্টারের কাছে একটি বাসের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
আইজিপি বলেন, সকাল সাড়ে ৫টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ফরহাদ মজহার অপহরণকারিদের কবলে ছিলেন বলে ফোনে তিনি বার স্ত্রীকে জানান কিন্তু এটি সত্য নয়,পুলিশী তদন্তে বেরিয়ে আসে এই সময়ে তিনি অপহরণের নাটক করেন। পুলিশের তদন্তে দেখা যায় এই সময়ের মধ্যে তিনি এক নারীর সাথে ৬ বার কথা বলেন। ২০০৭ সাল থেকে ওই নারীর সাথে ফরহাদ মজহারের সম্পর্ক রয়েছে বলে শহীদুল হক উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার দিনের বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ৭টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয় সাংবাদিকদের। ওই ফুটেজে ফরহাদ মজহারকে খুলনার নিউ মার্কেটে দেখা যায়। সেখানে তিনি নিউ মার্কেটের ৫ নম্বর গেট দিয়ে ৪টা ৪১ মিনিটে ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় ভিডিওতে দেখা যায় তার পরনে রয়েছে সাদা পাঞ্জাবি ও মাথায় সাদা পাগড়ি। এর পর তিনি ৬টা ৪৪ মিনিটে নিউ মার্কেট থেকে বেরিয়ে পাশের নূর মার্কেটে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি এক নারীকে দু’দফায় ডাচবাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং রকেটের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা পাঠান এবং মোবাইল ফোনে এক নারীর সাথে কথা বলেন। তার একটি মোবাইলে দুটি সিম কার্ড ব্যবহার করেন। একটি সিমকার্ড দিয়ে তিনি ওই দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে ১০ বার এবং তার পূর্ব পরিচিত ওই নারীর সাথে ৬বার কথা বলেন।
ফরহাদ মজহারের স্ত্রী পুলিশকে জানান, গত ৩ জুলাই ভোর পাঁচটার দিকে শ্যামলীর হক গার্ডেনের বাসা থেকে বের হন ফরহাদ মজহার। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে একটি নম্বর থেকে ফরহাদ মজহার তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতারকে ফোন করে বলেন, ‘ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের অভয়নগর এলাকায় খুলনা থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। পরের দিন ঢাকায় আনার পর আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
সুত্র- বাসস