জিপি নিউজঃ রাজশাহীতে এখন সাপ নিয়ে তৈরি হয়েছে আতংক। রাজশাহী শহরে এবং তানোরের এক গ্রামে এক সপ্তাহের মধ্যেই দুটি বাড়িতে পাওয়া গেছে বহু বিষধর গোখরা সাপ।
গত মঙ্গলবার রাজশাহী শহরের বুধপাড়ার বাসিন্দা মাজদার আলীর বাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল ২৭টি গোখরা সাপ।
শুক্রবার তানোরের এক কৃষক আক্কাস আলীর বাড়িতে পাওয়া গেছে ১২৫টি গোখরা সাপ।
হঠাৎ করে কি রাজশাহীতে সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে? বিষাক্ত সাপ কেন মানুষের ঘরে একে বাসা বাঁধছে?
বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট প্রাণীবিজ্ঞানী এবং ‘ওয়াইল্ড টিম’ নামে একটি সংস্থার প্রধান আনোয়ারুল ইসলাম বলছেন, মানুষের ঘরে সাপের আনাগোনা কোর বিরল ব্যাপার নয়।
“গ্রামের দিকে মানুষের সাধারণত মাটির ঘরে থাকে। মাটির ঘরে সাপের আনাগোনা মোটেই বিরল নয়। আর রান্না ঘরে তো নয়ই। কারণ রান্নাঘরে খাবার খেতে ইঁদুর যায়। পোকামাকড় যায়। অতএব রান্নাঘরে সাপ আনাগোনা করবেই”।
“আমরা একটি গবেষণায় দেখেছি যে, অনেক গ্রামে মানুষের ঘরের ভেতর গোলাঘর থাকে। এবং গোলাঘরে যে ধান থাকে, তার জন্যই ইঁদুর কিন্তু সেখানেও যেতে পারে। ইঁদুর যেখানে যাবে, সাপও সেখানে যাবে।”
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কোনও কোনও সাপ একশো পর্যন্ত ডিম পাড়তে পারে। এর মধ্যে যদি পঞ্চাশটা ডিমও ফোটে, পঞ্চাশটা সাপের বাচ্চা থাকতে পারে।
তিনি বলেন, সাপের ডিম ফুটে বাচ্চা বেরুনোর পর সেগুলো একসময় আবার জঙ্গলেই চলে যায়।
বছরের ঠিক এসময়টাই কেন সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়?
সাভারের বেদেপল্লীর একজন সাপুড়ে রমজান আলী বলছেন, বর্ষার শুরুতে সাপের উপদ্রব বাড়ার কারণ আছে।
“এই যে বর্ষা মওসুম এখন, আষাঢ় মাস। বর্ষার পানিতে চারদিক ভরে যায়। ফলে ধানখেতে বা জঙ্গলে যে সাপ থাকে, বিষধর সাপ, সেগুলো তখন মানুষের বাড়িতে চলে আসে। আর বর্ষা আসার মূহুর্তে সাপ ডিম পাড়ে। তখন ডিম পাড়ার জন্যও তারা উচু জায়গা খোঁজে।”
রাজশাহীর দুটি ঘটনাতেই যে সাপগুলোকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে, তাতে দুঃখ পেয়েছেন রমজান আলী।
“সাপ যখন মেলে ফেলে তখন আমাদের কাছে খুব কষ্ট লাগে। আমরা তো এই সাপ দিয়েই আয়-রোজগার করি। আমরা কষ্ট পাই। কষ্ট লাগে।’
রমজান আলী বলেন, বাংলাদেশে সাপের সংখ্যা এখন অনেক কমে গেছে।