জিপি নিউজঃ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচাররোধে দেশের জমির বর্তমান সরকারি দাম বাজার দর অনুযায়ী পরিবর্তনের চিন্তা ভাবনা করছে সরকার।
অর্থপাচার রোধে কি পদক্ষেপ নেবেন এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, পাচার সারা দুনিয়াতেই হয়। তবে রেটস অব গ্রোথ (পাচারের হার) আমাদের একটু বেশি। এর জন্য আমরাও দায়ী। আমাদের এখানে জমির সরকারি মূল্য কমিয়ে রেখেছি।
উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, কেউ এক কোটি টাকার জমি বিক্রি করে সেখানে সরকারি দাম ৩০ লাখ বাকী ৭০ লাখ কালো টাকা হয়ে যায়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পাচার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। খুব শিগগিরই জমির সরকারি দাম বাড়িয়ে বাজার দর করা হবে।
শনিবার সকালে সিলেটের নাইওরপুলে একটি ফোয়ারা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান, জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আব্দুল মোমেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
রেমিটেন্স প্রবাহ কেন কমছে সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, দুটি কারণে কমতে পারে। প্রথমত যারা বিদেশে থাকছেন তাদের অনেকেই সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রক্রিয়া করছেন। দ্বিতীয়ত তাদের একটি অভিযোগ আছে রেমিটেন্স পাঠানোর ফি অনেক বেশি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এই ফি আমরা কমিয়ে আনার চিন্তা ভাবনা করছি, সম্ভবত আগামী মাস থেকে কমে যাবে এবং সেটা হবে নামমাত্র একটি ফি।
তিনি আশা করেন তাতে রেমিটেন্স প্রবাহে গতি আসবে।
উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে (সুইস ব্যাংক) বাংলাদেশি নাগরিকদের জমা টাকার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এক বছরে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৪০ দশমিক ৭২ শতাংশ। সুইস ব্যাংকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশিদের জমার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৬০ লাখ সুইস ফ্র্যাংক। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা (প্রতি সুইস ফ্র্যাংক ৯০ টাকা হিসাবে)। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালে তা ছিল ৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরে বেড়েছে ১ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত এবং পাকিস্তানের পরই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। গত ১৫ জুন সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে প্রায় ২ বছর ধরে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের গতি নিম্নমুখী। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমেছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। গত ৬ বছরে এটিই সর্বনিম্ন, যা উদ্বিগ্ন করছে সরকার, অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের। এদিকে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।