জিপি নিউজঃ বিভিন্ন কোম্পানির দুধ সংগ্রহ বন্ধ রাখায় বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় দুধ ঢেলে প্রতিবাদ জানালেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারিরা।
তার আগে সোমবার দুপুরে ভাঙ্গুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুধ সংগ্রহ বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন শতাধিক খামারি।
এ সময় বিভিন্ন শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। পরে বেশকিছু ক্যানে রাখা দুধ রাস্তায় ঢেলে প্রতিবাদ জানান।
বিক্ষুব্ধ খামারিরা জানান, বৃহত্তর পাবনার ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বেড়া, সাঁথিয়া, সুজানগর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়াসহ আশপাশের উপজেলার ১৫ হাজার খামার থেকে প্রতিদিন আড়াই লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। যা রাষ্ট্রায়ত্ত মিল্ক ভিটাসহ চারটি কোম্পানিতে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশনায় এসব কোম্পানির উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্তে দুধ সংগ্রহ বন্ধ আছে। এতে ১০ থেকে ১২ টাকা দরেও দুধের ক্রেতা মিলছে না।
পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, জেলায় দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫৬৪টি। এসব খামারের ১ লাখ ৭০ হাজার গাভী থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ করেন খামারিরা।
এদিকে দুগ্ধ কোম্পানিগুলো দুধ কেনা বন্ধ করে দেয়ায় বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করা খামারিরা চরম দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। ক্ষুদ্র খামারিদের উৎপাদিত দুধ বিক্রিতে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন তারা।
পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর মেয়র ও দুগ্ধ খামারি গোলাম হাসনায়েন রাসেল বলেন, ভাঙ্গুড়া ও আশপাশের এলাকা থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত মিল্ক ভিটা ছাড়াও প্রাণ, আকিজ ও ব্র্যাক ডেইরি অর্ধশতাধিক সংগ্রহকেন্দ্রে দুধ সংগ্রহ করে। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশনার পর কোনো কোম্পানিই দুধ নিচ্ছে না। এই অবস্থা কয়েকদিন চললেই এ অঞ্চলের দুগ্ধ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।
মিল্ক ভিটার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. আশরাফ আলী জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সোমবার থেকে পাবনা ও সিরাজগঞ্জের সব কেন্দ্রে দুধ সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কোনো খামারির দুধ কেনা হবে না।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ জানান, খামারিদের আকস্মিক সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে এ সংকট মোকাবিলায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সুত্র- ইউএনবি