জিপি হেলথঃ স্তন ক্যান্সারে নারীদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে এতদিন এই ক্যান্সারের ব্যাপারে নারীদের সচেতন করার জোরটা ছিল বেশি, কিন্তু এখন পুরুষদেরকেও সচেতন করার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কারণ, পুরুষদের মধ্যেও স্তন ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। যদিও পুরুষদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার খুবই কম। এক হিসেবে দেখা যায় যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ৪১ হাজার মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, সেই তুলনায় মাত্র ৩০০ জন পুরুষ এই রোগে আক্রান্ত হন।
স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ বা উপসর্গ
- স্তনের কোন অংশ চাকা চাকা হয়ে যাওয়া অথবা কোন লাম্প দেখা যাওয়া
- স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন
- স্তনবৃন্তের আকারে পরিবর্তন
- স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা তরল পদার্থ বের হওয়া
- স্তনবৃন্তের আশেপাশে রাশ বা ফুসকুড়ি দেখা যাওয়া
- বগলে ফুলে যাওয়া বা চাকা দেখা দেয়া
- স্তনের ভেতরে গোটা ওঠা বা শক্ত হয়ে যাওয়া
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা
১. শল্য চিকিৎসা অর্থাৎ স্তন কেটে বাদ দেয়া অথবা স্তন এবং আরো কিছু অংশ বিশেষ অপারেশন করতে হয়।
২. রেডিওথেরাপি, বিশেষ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিকিরণ রশ্মি, যা ক্যান্সার কোষ মেরে ফেলে।
৩. কেমোথেরাপি ক্যান্সার বিধ্বংসী ওসুধ, স্তন ক্যান্সারে প্রাথমিক প্রতিরোধ: কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা কিছু স্তন ক্যান্সারকে প্রাতিরোধ করতে পারি।
ক. বিয়েশাদি এবং প্রথম সন্তান ৩০ বছরের আগেই সম্পন্ন করতে হবে।
খ. পরিমিত আহার ও হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর হালকা-পাতলা রাখতে হবে।
গ. অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার কম করে খেতে হবে এবং শাকসবজি বেশি খেতে হবে।
ঘ. মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাফি
৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী নারীদের প্রতি তিনবছর পর পর ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাম করানো উচিত। ম্যামোগ্রাম হচ্ছে এক্স-রে’র মাধ্যমে নারীদের স্তনের অবস্থা পরীক্ষা করা। সাধারণত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার এতো ছোট থাকে যে বাইরে থেকে সেটা বোঝা সম্ভব হয় না। কিন্তু ম্যামোগ্রামের মাধ্যমে খুব ছোট থাকা অবস্থাতেই বা প্রাথমিক পর্যায়েই ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পরলে ক্যান্সার থেকে সুস্থ্য হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রচুর থাকে। আর এই পরীক্ষার জন্য মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগে।
স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকির মাত্রা বেশি যাদের
৫০ বছরের বেশি বয়সীদের ঝুঁকির মাত্রা সবচেয়ে বেশি। স্তন ক্যান্সারে যতোজন আক্রান্ত হন তাদের ৮০ ভাগেরই বয়স হচ্ছে ৫০-এর উপর। সেই সাথে যাদের পরিবারে কারোর স্তন ক্যান্সার রয়েছে তাদেরও এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর।