জিপি নিউজঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কবীর হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে কাউন্সিলর কবিরসহ উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে থেমে থেমে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মসজিদের টাকার হিসাব ও কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। দু’গ্রুপের মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না স্থানীয় এমপি শামীম ওসমানের লোক হিসেবে পরিচিত।
যদিও মুন্না আগে আইভীর পক্ষে ছিল। এরমধ্যে কবির হোসেন ১৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মুন্না মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি। ক্ষমতাসীন দলের এই নেতার বিরুদ্ধে এলাকায় প্রভাব বিস্তার, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ভূমিদস্যুতার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে পুলিশ কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর মুন্নাসহ ২২ জনকে আটক করে আজ সকালে আদালতে পাঠিয়েছে। বতর্মানে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, স্থানীয় দক্ষিণ নলুয়া জামে মসজিদের কমিটি নিয়ে কাউন্সিলর কবীর হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। রোববার এশার নামাজের পর কাউন্সিলর কবীরের ভাগিনা টিপু বর্তমান কমিটির কাছে হিসাব চাওয়ায় তাকে মারধর করে মসজিদ থেকে বের করে দেয় মুন্নাপন্থীরা। এ নিয়ে এক পক্ষ সদর থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে পুলিশ এলাকায় পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপক্ষ আরেক পক্ষের ওপর অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালায়। দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষের সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দের এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে কাউন্সিলর কবির হোসেন, নেয়ামত উল্লাহ, সুজন, সত্যজিৎ, দুর্জয়সহ কম পক্ষে ১০ জন আহত হন। তাদের নারায়ণগঞ্জ জেনালে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এক পর্যায়ে পুলিশ কাউন্সিলর কবির হোসেন ও তার বাহিনীর ১৭ জন, সাবেক কাউন্সিলর মুন্না ও তার বাহিনীর ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, মসজিদ কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোন করে দু’পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা রাতের অন্ধকারের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরসহ ২২ জনকে রাতেই আটক করে থানা হাজতে রাখা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় দু’টি মামলা দায়েরের পর সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। বতর্মানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।