জিপি নিউজঃ কারান্তরীণ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তির সুপারিশ করেছে তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল হারুন রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। তিনি বলেন, কয়েকটি সুপারিশসহ মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতিবেদন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, পূর্বে যে সমস্ত রোগ উনার (খালেদা জিয়া) ছিল, সেই রোগগুলোই পেয়েছেন। আর উনার শারীরিক অবস্থা এ মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ নয় এবং উনারা (মেডিকেল বোর্ড) উনাকে আরো সুচিকিৎসার জন্য অন্য একটা হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য অ্যাডভাইস করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কেই রেফারেল হসপিটাল হিসেবে উনারা সর্বোচ্চ পর্যায়ের বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন।
অধ্যাপক হারুন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ হলো বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ। তবে এই অসুস্থতা কারাগারে থাকার কারণে নয়। কারাবন্দী হওয়ার আগে থেকে বেগম খালেদা জিয়ার বেশ কিছু সমস্যা ছিল। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা গুরুতর নয়।
বিএসএমএমইউয়ের এই পরিচালক বলেন, বোর্ড সুপারিশ করেছে, যে হাসপাতালে সব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে ভর্তি করাতে। তারা বিএসএমএমইউয়ের নামও সুপারিশ করেছে। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতেও সুপারিশ করা হয়েছে।
৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী রাজধানীর কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ জানায়। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের সদস্যরা গতকাল শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে কারাগারে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী (ইন্টারনাল মেডিসিন), অধ্যাপক হারিসুল হক (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী (অর্থোপেডিক সার্জারি), সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা আলী (চক্ষু) ও সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।
এদিকে এই মেডিকেল বোর্ডে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কোনো চিকিৎসক না রাখায় এর সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ বলেছেন, তাঁরা এই মেডিকেল বোর্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তিনি আরো বলেন, সরকারের গঠিত মেডিকেল বোর্ডে উপযুক্ত ও সঠিক চিকিৎসা হবে না। আগে যাঁরা বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করতেন, তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে মেডিকেল বোর্ড করার দাবিও জানান তিনি।