জিপি নিউজঃ উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্দেশ্যে চীন বলেছে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জিতবে না।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি সংরক্ষণবাদ প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছেন।
উন্নয়নশীল দেশের ওপর শুল্ক অবরোধের যে হুমকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিয়েছেন তা নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।
এই দুই শীর্ষ নেতা ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে তৈরি জোট ব্রিকসের বৈঠকে এ কথা বলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানসবার্গে তিনদিনব্যাপী এ বৈঠক হচ্ছে।
ব্রিকস দেশগুলোতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি বাস করে, কিন্তু এই দেশগুলো কখনোই একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে কাজ করেনি।
মিস্টার শি বলেন, “আমাদের এক তরফা বিশ্ব ব্যবস্থা প্রত্যাখ্যানে অটল থাকতে হবে। আর বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধও আমাদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত, কারণ এতে কেউ জিতবে না।”
“এক তরফা কোন ব্যবস্থা কেউই মেনে নেবে না। আর চীন নিজের দরজা খোলা রেখেই নিজেকে আরো বেশি উন্নত করতে থাকবে।”
সমান্তরাল ক্ষতি বা কোল্যাটারেল ড্যামেজ
উন্নয়নশীল দেশগুলো এবং ক্রমবর্ধনশীল বাজারের যৌথ উত্থান কেউই আটকাতে পারবে না। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যবস্থায় ভারসাম্য ফিরে আসবে বলে মনে করেন মিঃ শি।
গত সপ্তাহে মিঃ ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি চীন থেকে আমদানি করা ৫০০ বিলিয়ন ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক বসাতে প্রস্তুত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বাস করেন – চীনের কাছে বাজার খুলে দিয়ে আমেরিকার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি এক হিসাব দেখিয়েছেন যে, ২০১৭ সালে আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি ৮০০ বিলিয়ন অর্থাৎ ৮০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। আর এই ঘাটতির প্রধান কারণ চীনের সাথে বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান ভারসাম্যহীনতা।
মিঃ ট্রাম্পের মতে- চীনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নানা কারসাজি করে শুধু জিনিস বিক্রি করা, যার পরিণতিতে আমেরিকার শত শত শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে এবং লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে।
মার্চের শেষে মিঃ ট্রাম্প অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাতসহ শত শত চীনা আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ঐ সব পণ্যের আমদানি মূল্য ৬ হাজার কোটি ডলার হতে পারে।
এরপরে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীন মার্কিন পানীয়, শুকরের মাংস, ফল সহ ৩০০ কোটি ডলারের মার্কিন পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক বসিয়েছে।
বিশ্বের এক নম্বর এবং দুই নম্বর অর্থনীতির মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধের পরিণতি নিয়ে বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।
আর এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব অন্য দেশের ওপরও পড়তে শুরু করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা এই মূহুর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্কের কুফল ভোগ করছে।
দেশটির এই দুই খাতের সাত হাজার কর্মীকে এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট মিঃ রামাফোসা বলেন তার দেশ এক পাক্ষিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরোধী।
তিনি মনে করেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মাবলীর সঙ্গেও বাণিজ্য যুদ্ধের ধারণা সাংঘর্ষিক।
-সুত্র-বিবিসি-