জিপি নিউজঃ ব্যাংকে যাদের লাখ টাকা রয়েছে তাদেরকে যথেষ্ট সম্পদশালী বলে মনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাই তিনি তাদের রক্ষিত লাখ টাকার ওপরে আবগারি শুল্কের হার দেড়গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর সদ্য ঘোষিত আগামী অর্থবছরের বাজেটকে পুরোটাই উজ্জ্বল বলে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেছেন, আমার মতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট হার বাস্তবায়ন হলেও বাড়বে না দ্রব্যমূল্য। প্রত্যেক বাজেটই উচ্চাভিলাসী, কোনো বাজেটেরই আকার আগের বাজেটের চেয়ে কম হয় না। এটি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বাজেট হলফ করে বলতে পারি।
এ বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো ব্যাপারে জোর দেয়া হয়েছে। আর যারা বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন করা যাবে না তাদের কথা অবান্তর।
শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়াতনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম প্রমুখ।
বাজেটে ব্যাংকের রক্ষিত টাকার ওপর কর বাড়ানো হয়েছে- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা একলাখ টাকা ব্যাংকে রাখতে পারেন, তারা আমাদের দেশের তুলনায় সম্পদশালী। তারা বাড়তি ভারটা বহন করতে পারবেন, সমস্যা হবে না।
প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে, বছরের যেকোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি লেনদেনের উপর আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হয়েছে।
নতুন বাজেটে আবগারি শুল্ক আরোপের সীমা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ আগে বছরের যে কোনো সময় ২০ হাজার টাকা লেনদেনে শুল্ক আরোপ করা হতো, এখন এক লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনে শুল্ক আরোপ করা হবে না।
নতুন বাজেট প্রস্তাবে ২০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনে বিদ্যমান ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে বলে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এক লাখ টাকার লেনদেনে এখন ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক আরোপ করা আছে। এখন সেটা আর দিতে হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে মুহিত বলেন, যাদের টাকা এক লাখের উপরে থাকবে কেবল তাদের উপরই একটা কর ধার্য করেছি। বড়লোকের ক্ষেত্রে আমাদের করটা ছিল, কিন্তু যারা মিড লেভেলে ছিল তারা এর অন্তর্ভূক্ত ছিল না। একলাখ টাকার নিচে যারা আছেন, তাদের ভার থেকে মুক্ত করাই যথেষ্ট।
নতুন বাজেটে ব্যাংক একাউন্টে লেনদেন এক লাখ টাকার ঊর্ধ্বে হতে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা, ১০ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে হতে এক কোটি টাকা পর্যন্ত এক হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে দুই হাজার ৫০০ টাকা, এক কোটি টাকার ঊর্ধ্বে হতে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত সাত হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১২ হাজার টাকা এবং পাঁচ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বিদ্যমান ১৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।