জিপি নিউজঃ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, নতুন প্রজন্ম নজরুল চর্চার মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করবে এবং বৈষম্যহীন, সমতাভিত্তিক একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে দেশপ্রেমের মহান ব্রতে উজ্জীবিত হয়ে জাতি গঠনে অর্থবহ অবদান রাখবে।
জাতীয় কবির ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ এখানে ত্রিশালে জাতীয় পর্যায়ে ৩ দিনের কর্মসূচির উদ্বোধনকালে রাষ্ট্রপতি বলেন, নজরুল কেবল বাংলার জাতীয় কবিই নন, তিনি জাগরণের কবি, সাম্যের কবি।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, নতুন প্রজন্ম নজরুলের অনিবার্ণ শিখার আলোকচ্ছটায় নিজেদের সমৃদ্ধ করে সমাজ পরিবর্তনে ও সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রাখবে।
জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রাষ্ট্রপতি বলেন, নজরুল পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করলেও ১৯১৪ সাল থেকে তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কাটিয়েছেন ময়মনসিংহের এই ত্রিশালে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সাম্যের কবি হিসেবে নজরুল তার কালজয়ী প্রতিভা, সমৃদ্ধ ও মূল্যবান সাহিত্য কর্ম, বক্তৃতা, জীবনাদর্শন এবং মানবিক মূল্যবোধের স্ফূরণের মাধ্যমে বাঙালীর জাগরণে, স্বাধিকার ও স্বাধীনতার আন্দোলন সংগ্রামে এবং ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণায় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নজরুল বহুবার বাংলাদেশের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটে এসেছেন। অবিভক্ত বাংলার পশ্চাৎপদ জনপদসমূহের মানুষের কাছে এসেছেন। তার বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব এবং বক্তৃতা গান ও আবৃত্তির মাধ্যমে বাংলার সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের মাঝে জাগরণের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন এবং স্বাধীনতার বাণী শুনিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, নজরুলের সাহিত্য কর্ম পাকিস্তানী শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। তার দেশপ্রেম ও উদ্দীপনামূলক কবিতা ও গান আমাদের লড়াই সংগ্রামের স্পৃহাকে শানিত করেছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সৃষ্টিশীল এই মহান কবির প্রতি সম্মান জানাতে কবিকে ১৯৭২ সালে সপরিবারে কলকাতা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অতিরিক্ত সচিব এম মসিউর রহমান ও ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বেগম সিমিন আরা এমপি। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। ২৫ মার্চ দরিয়ারামপুর নজরুল মঞ্চ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। ২৭ মে এই কর্মসূচি শেষ হবে।
সুত্র- বাসস