জিপি নিউজঃ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া এলাকায় এক বিধবা নারী (৪০) ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি স্থানীয়দের জানানোর পর গ্রাম্য শালিসে অভিযুক্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে সমাধান করা হয়েছে।
তবে এ শালিসের খবর পেয়ে সোমবার বিকালে পুলিশ অভিযান চালিয় অভিযুক্ত মো. রুবেল ও নুর নবী এবং শালিসদার আবুল কাশেম ওরফে মাছ কাশেমকে আটক করেছে।
বিধবা ওই নারী বলেন, প্রায় তিন মাস আগে তার স্বামী মারা যান। তিনি চট্টগ্রামে একটি গার্মেসে চাকরি করেন। ঘটনার দিন ২০ ফেব্রুয়ারি বিকালে চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। সঙ্গে তার ১২ বছর বয়সী ছেলেও ছিল। রাত ১০টার দিকে তিনি ছাতাপাইয়া বাজারে পৌঁছান। সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য সেলিম নামের এক ব্যক্তির রিকশা ভাড়া করেন। কিছুদূর যাওয়ার পর রিকশাচালক রিকশা থামান।
এক ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে থাকার পর নুর নবী ও রুবেল সেখানে হাজির হয়। তারা তাকে টেনে-হিঁচড়ে সড়ক থেকে একটু দূরে খাল পাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ছেলে কান্নাকাটি করলে তাকে ছুরির ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে রাখে।
ধর্ষণের শিকার ওই নারী জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় শালিসদার আবুল কাশেম ও মো. হানিফ ছাতারপাইয়া বাজারে শালিসে বসেন। শালিসে শিশু, কিশোর, তরুণ ও যুবকসহ বিভিন্ন বয়সের প্রায় অর্ধশত লোক ছিল। এদের সামনেই শালিসে রায় দেয়া হয় উপস্থিত দুই অভিযুক্ত রুবেল ও নুর নবীর ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং ১০ বার কান ধরে উঠবস।
এদিকে বিধবা ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনাটি সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানাজানি হওয়ার পর তৎপর হয়ে ওঠে থানা-পুলিশ। পুলিশের একটি দল দুপুরে ভিকটিমকে মামলার জন্য থানায় নিয়ে আসে। আরেকটি দল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নুর নবী ও রুবেলকে এবং শালিসদার আবুল কাশেমকে আটক করে। ধর্ষণ ও শালিসের ঘটনায় জড়িত বাকিরা গা ঢাকা দিয়েছে।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ চৌধুরী জানান, বিধবা নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় রুবেল ও নুর নবী নামে দুইজন এবং আবুল কাশেম নামে এক শালিসদারকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ভিকটিম বাদী হয়ে এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।