বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের নেতারা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।
তাঁদের দাবি, সরকার অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে। বর্তমান সরকার বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে বাইরে রেখে আবার একটি পাতানো নির্বাচন করতে চায়।
বুধবার সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলমান অনশন কর্মসূচি থেকে ২০ দলের শরিক নেতারা এসব কথা বলেন। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন এরই মধ্যে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করেন বিশেষ আদালতের বিচারক ডা. মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথেও সক্রিয় বিএনপি। কর্মসূচি সফল করতে আজ সকাল ১০টার আগ থেকেই নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। এরপর আসেন বিএনপি ও জোটের জ্যেষ্ঠ নেতারা। ১০টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় অনশন।
২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীরবিক্রম) বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে শেখ হাসিনার সরকার রেহাই পাবে না। খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে প্রধানমন্ত্রী শান্তি পাবেন না। মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁকে মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তাঁকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে। তারা চায়, বিএনপি ও ২০ দলকে বাইরে রেখে ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে। কিন্তু সেটি আর করতে দেওয়া হবে না।
এ ছাড়া অনশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার প্রমুখ।
অনশন কর্মসূচিতে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদীন ফারুক, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাবির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ২০ দলের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম, ন্যাপ-ভাসানীর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।