জিপি নিউজঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঁচজনের মধ্যে নেসার আলী ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড এবং শামসুল হোসেন তরফদার, মোবারক মিয়া ও ইউনুস আহমেদকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেয়।
এর আগে মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২০ নভেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। এই মামলার ৫ আসামি হলেন- শামসুল হোসেন তরফদার, মোবারক মিয়া, নেসার আলী, ইউনুস আহমেদ ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী। ইউনুস আহমেদ ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন, বাকিরা পলাতক।
২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করেন।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, রেজিয়া সুলতানা সমন ও আবুল কালাম আজাদ। আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এম এইচ তামিম।
২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে সেদিন বিকেলেই রাজনগর উপজেলার গয়াসপুর গ্রামের ওজায়ের আহমেদ চৌধুরীকে (৬০) মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনা থেকে ও সোনাটিকি গ্রামের মৌলভী ইউনুছ আহমদকে (৭০) তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর এ তদন্ত শুরু হয়।
প্রসঙ্গত,প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। এ সময় দুই আসামি ইউনুছ ও ওজায়ের ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজনগরের ওই পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাঁচ ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৮ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ১১ জনকে অপহরণ, আটক ও নির্যাতন এবং ২২টি বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ।
গত সোমবার (২০১৭,২০ নভেম্বর) প্রসিকিউশন পক্ষে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ শিমন, তাপস কান্তিবল ও রেজিয়া সুলতানা চমন। তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি (ফাঁসি) প্রার্থনা করেন।
অপরদিকে আসামি ইউনুস ও ওজায়েরের পক্ষে ছিলেন আবদুস সোবহান তরফদার এবং পলাতক তিন আসামির পক্ষে ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।