জিপি নিউজঃ বুধবার সকাল ১১ টায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং পদ্ধতি চালুসহ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নির্বাচন কমিশনের সাথে অনুষ্ঠিত সংলাপে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে দলের ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে অংশ গ্রহণ করবেন।
এছাড়াও সংলাপে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু ও ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমানসহ দলের সিনিয়র নেতারা অংশ গ্রহণ করবেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দলের ২১ সদস্যেরএকটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ১১টি প্রস্তাব তুলে ধরবে। সকল দলের অংশ গ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বেশ কিছু প্রস্তাবনাও থাকবে। দলের পক্ষ থেকে যে সকল প্রস্তাব তুলে ধরা হবে তার মধ্যে অন্যতম প্রস্তাব থাকবে সংবিধানে নির্বাচনকালীন যে সরকারের কথা বলা হয়েছে , আওয়ামীলীগ চায় এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।
ইভিএম ছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রস্তাবনায় সেনা মোতায়েন না করা, আরপিওতে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন না আনা, একান্ত জরুরি না হলে সীমানা পুনর্বিন্যাস না করা, প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকার ভুলগুলো দূর করার বিষয় বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হবে।
তবে সেনাবাহিনী নিয়ে দলটির বক্তব্য থাকবে , নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পূর্ন ইসির এখতিয়ার। ইসি প্রয়োজন মনে করলে আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন করতে পারে। তবে আরপিওতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষাবাহিনীকে সংযুক্ত করার প্রয়োজন নেই।
নির্বাচন কমিশনের সাথে আওয়ামী লীগের সংলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বাসসকে বলেন, বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এই সরকারই নির্বাচনকালীন সময়ে অন্তবর্তিকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এই সরকার রুটিন কাজ গুলো করবে। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন।
তিনি বলেন, আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। সংবিধানের বাইরে যাওয়া মানেই হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিএনপি এটা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করছে।
এছাড়া জোর দাবি না থাকলেও আওয়ামী লীগ ই-ভোটিংয়ের প্রস্তাবনা দিবে বলে জানিয়ে আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, এই নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সরাসরি অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই। তারা রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকতে পারে। নির্বাচন কমিশন যাতে স্বচ্ছ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সেই জন্যও দলের পক্ষ থেকে আরো কিছু প্রস্তাবনা নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরা হবে বলেও জানান তিনি। ই-ভোটিং নিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চাচ্ছে একটি ডিজিটাল নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু করতে। এরই একটি অংশ হচ্ছে নির্বোচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরোপুরি ইভিএম চালু করতে না পারলেও অন্তত কিছু কিছু কেন্দ্রে এর ব্যবহার এবং স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ইভিএম’র মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব। কমিশনের কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
এর আগে রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সুনির্দিষ্ট ১১ দফা প্রস্তাবনা দেবে। এটা গোপন কিছু নয়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।