জিপি নিউজঃ গত কয়েকদিন আগে ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে যেভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে সেটি বাংলাদেশের জনগণের কাছে অসম্মান ও লজ্জার বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ভারতকে সব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর জন্য সেই লজ্জাটুকু সম্বল করে দেশে ফিরেছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে সোমবার মাওলানা আকরাম খাঁ হলে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব দিবস উপলক্ষে ‘৭ নভেম্বরের চেতনায় : দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “কী দেননি ভারতকে? অথচ আপনি যখন ভারতে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছেন তখন একটি কথাও বলছেন না। আপনি একজন প্রধানমন্ত্রী। অথচ ভারত সফরে সে দেশের একজন নবীন মহিলা সাংসদ উপমন্ত্রী আপনাকে বিমানবন্দরে রিসিভ করছে। আমি জানি না এটা আপনার কিংবা আপনার সরকারের কাছে কতটুকু লজ্জার অসম্মানের। কিন্তু দেশের মানুষের কাছে এটি একটি বড় লজ্জার বিষয়। ভারতকে সব দিয়ে আপনি দেশবাসীর জন্য সেই লজ্জাটুকু সম্বল করে দেশে ফিরছেন।”
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “বর্তমান সরকার যেমন কোনো নিয়ম-নীতি মানে না, গণতন্ত্র মানে না- ঢাকা শহরটাও এখন তেমনই নির্দয় শহরে পরিণত হয়েছে। ইচ্ছা করলেই কেউ নিজের মতো করে চলতে পারে না।”
আরও বলেন, “যে দেশ স্বাধীন করতে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি হয়েছে, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে, ভাবা যায়- সেই দেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। আমরা এমন একটি দেশে বসবাস করছি যে দেশ গণতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রের দিকে যাত্রা করেছে।”
সাবেক ছাত্রদল সভাপতি বলেন, “আজকে এবং গতকালের গণমাধ্যমগুলো যদি দেখেন সেখানে আমরা যাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চিনি, যিনি প্রধানমন্ত্রী বলে নিজেকে দাবি করেন তিনি ভারতকে সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু ভারত তাকে যথাযথ সম্মান করছে না। গতবার যখন তিনি ভারত সফরে গেলেন ভারতের এক মহিলা যিনি প্রথম সংসদ সদস্য হয়েছেন সম্ভবত উপমন্ত্রী তিনি প্রধানমন্ত্রীকে রিসিভ করছেন। এটি দেশের মানুষের জন্য লজ্জার।”
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “আমাদের ওপর আপনারা প্রতিনিয়ত মামলা অত্যাচার করছেন। কিন্তু আপনি যখন বিদেশে যান বিশেষ করে ভারতে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছেন, একবারও তো একটা কথা বলছেন না। ভারতকে আমরা কী দেইনি। আপনি ফেনী নদীর পানিটুকুও দিয়ে এসেছেন। অথচ ভারত থেকে ফিরছেন দেশবাসীর জন্য লজ্জা নিয়ে।”
৭ নভেম্বরকে বাংলাদেশে দ্বিতীয়বার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দিন- উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রাখা মানে দেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধকে বন্দী করে রাখা। তিনি হলেন ৭ নভেম্বরের চেতনা, বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার চেতনা। দেশে যারা আত্মমর্যাদা হারিয়ে ফেলেছেন তারা ৭ নভেম্বরের দিকে তাকান, বেগম খালেদা জিয়ার দিকে তাকান, তাহলে মর্যাদা কী জিনিস এটা বুঝতে পারবেন।”
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। দাঁড়ান মাথা উঁচু করে। তবে আমি উনাকে বলি, আপনি গণতন্ত্রের দিকে তাকান, গণতন্ত্রের কাছে মাথা নিচু করেন। তাহলে আপনি অহংকারী হতে পারবেন। গণতন্ত্রকে দেখুন, গণতন্ত্রকে বাঁচান, গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেন।”
জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর ডাক্তার আব্দুল কুদ্দুস ও জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, জিয়া পরিষদের মহাসচিব ড. প্রফেসর এমতাজ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ ও আবদুল্লাহ হিল মাসুদ প্রমুখ।