জিপি নিউজঃ বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সব দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে, নিজ কার্যালয়ের প্রভোস্টদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন। প্রভোস্টদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য কার্যালয়ের বাইরে আসেন ভিসি। এ সময়, ভিসি আবরার হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সব দাবির প্রতি নীতিগত সমর্থন জানিয়ে বলেন আমি তোমাদের সঙ্গে আছি।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে এসে ভিসি বলেন, ‘আমি তোমাদের অভিভাবক, তোমরা আমার সন্তান। আবরারের সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা অনাকাঙ্ক্ষিত।’ এ কথা শোনার পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা বলেন, ‘এটা একটা খুন, আপনাকে স্বীকার করতে হবে।’
এসময়, শিক্ষার্থীরা ভিসিকে প্রশ্ন করেন আবরার হত্যার পর ক্যাম্পাসে আসেননি কেন? জবাবে ভিসি জানান, তিনি ক্যাম্পাসেই ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের আলাদা ডেকে নিয়ে কথা বলার প্রস্তাব দিলে ভিসির সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এ সময় আবারও শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবীগুলো হলঃ
১. খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের শনাক্ত করে সবার ছাত্রত্ব আজীবন বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি, তা তাঁকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে ডিএসডব্লিউ স্যার কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন, এ বিষয়ে তাঁকে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে সবার সামনে জবাবদিহি করতে হবে।
৫. আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সবার ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আহসানউল্লা হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের আগের ঘটনাগুলোতে জড়িত সবার ছাত্রত্ব বাতিল ১১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
৬. রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
৭. মামলা চলাকালে সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।