জিপি নিউজঃ আশুরা উপলক্ষে পুরনো ঢাকার হোসেনী দালানের সামনে থেকে শুরু হয়েছে শিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তাজিয়া মিছিল বের হয়।
কালো-লাল-সবুজের নিশান উড়িয়ে, কারবালার শোকের মাতম উঠেছে হাজার হাজার মানুষের মিছিলে। বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম ধ্বনি তুলে এগিয়ে যাচ্ছে মিছিল, সবার পা খালি। মিছিলে রয়েছে ‘বৈল দল (ঘণ্টা পড়া তরুণ)’। কেউ বা এগোচ্ছে নওহা (শোকগীতি) পড়তে পড়তে।
ন্যায় প্রতিষ্ঠায় হিজরি ৬০ সালের ১০ মহররম হযরত মুহাম্মদের (স.) দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.) ইসলামের তৎকালীন শাসনকর্তা এজিদের সৈন্য বাহিনীর হাতে কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছিলেন। মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে শিয়ারা এ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় এ দিনটিকে সুন্নিদের তুলনায় ভিন্নভাবে পালন করে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তাজিয়া মিছিলে পাইক (শরীর রক্তাক্ত করা) দলভুক্ত ব্যক্তিদের দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে।
মিছিলের সামনে রয়েছে কালো কাপড়ের ইমাম হোসেনের (র.) তাজিয়া (প্রতীকী কবর)। নারী-পুরুষ শিশুদের হাতে অসংখ্য কালো, লাল ও সবুজ নিশান। তরুণদের (ভেস্তা) হাতে হাতে বিচিত্র আলাম (দীর্ঘ লাঠির মাথায় পতাকা)।
তাজিয়া মিছিলটি বকশিবাজার, উর্দ্দুরোড, লালবাগ চৌরাস্তা, ঘোড়া শহীদের মাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে জিগাতলা (ধানমন্ডি লেকের কাছে) গিয়ে শেষ হবে। পথের দুপাশে রয়েছে উৎসুক জনতার ভিড়। মানুষ ছাদে দাঁড়িয়ে, জানালা দিয়ে মিছিল উপভোগ করছে। পুরো মিছিল ঘিরে রয়েছে পুলিশ, র্যাবসহ বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকায় আশুরার দিনে তাজিয়া মিছিল শুরুর সঠিক ইতিহাস না পাওয়া গেলেও মনে করা হয় ১৬৪২ সালে সুলতান সুজার শাসনামলে মীর মুরাদ হোসেনী দালান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ শোক উৎসবের সূচনা করেন।
তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নেয় হোসেনী দালানে। সকালে মিছিলে আসা লোকজনকে তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়।
কঠোর নিরাপত্তায় পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিল
Facebook Comments