জিপি নিউজঃ নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে পুনরায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে ফল প্রত্যাখ্যান করেছি। তখনই আমরা বলেছিলাম, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের রায়ের মধ্য দিয়ে একটি সরকার গঠন করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘আজকে আমরা আবার তারই পুনরাবৃত্তি করছি। আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। সেখানে জনগণ যেন সুষ্ঠুভাবে তাদের রায় দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে প্রথম সংসদ অধিবেশন বসার প্রতিবাদে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে একটা সংসদের অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। এই সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। গত ৩০ ডিসেম্বর একটি ভোট ডাকাতির ভুয়া নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সম্পূর্ণ ভোট ডাকাতির মধ্য দিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার হরণ করে দখলদারী সংসদ ও দখলদারী সরকার বসিয়েছে।’
‘এই নির্বাচনের আগ থেকেই জনগণ যেন অংশগ্রহণ করতে না পারে, সে জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়েছে। প্রায় এক বছর আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে একইভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।’
বিএনপি নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দেশের জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে গণতন্ত্রকে ধংস করে দিয়ে এই রাষ্ট্রকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার সব ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করেছে। ১৯৭৫ সালে তারা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। ঠিক একই কায়দায় আজকে তারা জনগণের সমস্ত অধিকারকে কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রের সকল প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে একদলীয় দখলদারিত্বের সংসদ গঠন করেছে।’
বেগম খালেদা জিয়াসহ যাদের মিথ্যা মামলায় আটক রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা আহ্বান জানাতে চাই, সকল দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের অধিকার, ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংসদকে বাতিল করে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।’
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শিরিন সুলতানা, এ বি এম মোশারফ হোসেন, শফিউল বারী বাবু, মুতাজুল করিম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, আকরামুল হাসান, বিলকিস জাহান শিরিন প্রমুখ। মানববন্ধন পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ।
এর আগে বেলা ১১টায় মানববন্ধন শুরু হয়। বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এতে উপস্থিত ছিল। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।