জিপি নিউজঃ গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে হত্যা করা রাশিয়ান পুলিশ কর্মকর্তা মিখাইল পপকভকে দ্বিতীয় দফায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মিখাইল পপকভ রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে পুলিশ বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
সাইবেরিয়ার ইরকুত্স্ক এলাকার কাছে ১৯৯২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি ৫৫ জন নারী এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেন।
২০১৫ সালে ২২ জনকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয় পপকভকে।
তবে পরবর্তীতে প্রকাশিত হয় যে তিনি আরো অন্তত ৫৬ জনকে হত্যা করেছেন।
যেভাবে হত্যা করতেন পপকভ
গভীর রাতে নারীদের গাড়িতে করে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে তাদের হত্যা করতেন পপকভ।
পপকভের হাতে নিহত নারীদের বয়স ছিল ১৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তিনটি ঘটনায় পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করেন তিনি।
ঐ নারীদের মধ্যে অন্তত ১০ জনকে হত্যার আগে তিনি ধর্ষণ করেন।
২০১২ সালে একটি ডিএনএ পরীক্ষার পর পুলিশ তার গাড়ি শনাক্ত করতে সক্ষম হলে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
ইর্কুত্স্ক এলাকার কাছে আঙারাস্ক শহরের আশেপাশে একটি কুড়াল ও হাতুড়ি দিয়ে এই হত্যাযজ্ঞ চালান পপকভ।
হত্যার পর ভুক্তভোগীদের খণ্ড-বিখণ্ড দেহ জঙ্গলে, রাস্তার পাশে বা স্থানীয় একটি সমাধিস্থলে ফেলে দিতেন তিনি।
যেভাবে ধরা পড়লেন
কয়েকটি দেহের আশেপাশে পপকভের ‘নিভা’ গাড়ির চাকার দাগ পাওয়া যায়। তদন্তকারীরা আশেপাশের এলাকার সব নিভা গাড়ির মালিকের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করলে ধরা পড়েন পপকভ।
প্রথমবার ধরা পড়ার পর একপর্যায়ে ২০টি খুনের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন পপকভ।
তার হাতে খুন হওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সী ভুক্তভোগী নারীর বয়স ছিল ১৫।
পপকভের নিজের বক্তব্য অনুযায়ী, আঙারাস্ক শহরকে দুশ্চরিত্র নারীদের কবল থেকে ‘বিশুদ্ধ’ করার অভিযানে নেমেছিলেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে ২২ জনের মৃত্যুর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়ে ইর্কুত্স্কের একটি আদালত। তবে অন্যান্য হত্যাকাণ্ডগুলোর তদন্তও শুরু হয়ে যাওয়ায় কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে পুলিশের হেফাজতেই রাখা হয়।
সেখানে তার সাথে থাকা আরেক বন্দীকে তিনি জানান যে ২২ জনের বাইরে আরো অনেক মানুষকেই তিনি খুন করেছেন।
পপকভকে মানসিকভাবে সুস্থ বলে ঘোষণা করা হলেও তার মধ্যে মানুষ হত্যা করার এক ধরণের ‘আবেগপূর্ণ আকর্ষণ’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন আইনজীবিরা।
হত্যা করা মানুষের সংখ্যার হিসেবে সোভিয়েত আমলের সিরিয়াল কিলার আন্দ্রেই চিকালিতো বা পরবর্তী সময়ের ‘চেসবোর্ড কিলার’ নামে খ্যাত আলেক্সান্দার পিচুশকিন, যারা যথাক্রমে অন্তত ৫২ জন ও ৪৮ জনকে খুন করেছিলেন, দু’জনকেই পেছনে ফেলেছেন মিখাইল পপকভ।
সুত্র- বিবিসি