জিপি নিউজঃ রাজনৈতিক সংকট নিরসনের আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একদিকে আলোচনা অন্যদিকে আন্দোলন, এটি আমার বোধগম্য নয়’। প্রধানমন্ত্রী, এখনও তো সেই অর্থে জোরালো আন্দোলন শুরু হয়নি, আপনি সংলাপের মাধ্যমে সংকট নিরসন করতে পারলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তো আন্দোলনের পথে যাবে না। সংকট নিরসনের চাবিকাঠি আপনার হাতে। আলোচনার আহবান তো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অব্যাহত আছে। তবে আপনাকে ‘কালের যাত্রার ধ্বনি’ শুনতে হবে। ‘কালের যাত্রার ধ্বণী’ হচ্ছে বর্তমানে জনগণের দাবি-যা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাত দফা দাবির মাধ্যমে উত্থাপন করেছে। আপনি সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেন তাহলে তো কোন সংকট থাকার কথা নয়। সংলাপ ফলপ্রসূ করুন, তখন বিরোধী দল আন্দোলনের পথে হাঁটবে না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপ চলছে, সেই সংলাপে এখনও পর্যন্ত সংকট সুরাহা না হওয়ার আগেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড় করছে নির্বাচন কমিশন-যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এমনকি নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মতামতকেও অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। গণমাধ্যমেও এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তফসিল পেছানোর আবেদন করা হলেও ইসির সচিব তা অস্বীকার করে বলেছেন তারা কোন চিঠি পাননি। এ সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষনা করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। আমি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-নিজ আইনসঙ্গত ক্ষমতাবলে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিন। রাজনৈতিক সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তফসিল ঘোষনা থেকে বিরত থাকুন।
রিজভী আরও বলেন, সারাদেশে নির্বাচনি কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার বাছাই করছে পুলিশ। বিভিন্ন থানা নির্বাচন কর্মকর্তারা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ তালিকা ধরে ধরে কারা সরকার দলীয় সমর্থক তাদের নাম বাছাই করছে নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে। এমনকি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে গিয়ে যাচাই করছে, ফোন করে জিজ্ঞাসা করছে আপনি কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য। যদি কোন শিক্ষক বিএনপি সমর্থক হয়ে থাকে তাকে বলা হচ্ছে আপনার নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের দরকার নেই। জনগণ এমন কর্মকান্ডকে ভোট কারচুপির পূর্ব প্রস্ততি বলেই মনে করছে। সরকারের হুকুমেই এমন নজিরবিহীন কর্মকান্ড চলছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে।