জিপি নিউজঃ ভারতের আসাম রাজ্যের তিনসুকিয়া জেলায় বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামকে (উলফা) সন্দেহ করা হচ্ছে। উলফা বাঙালিদের উপর হামলা চালাতে পারে, সাত দিন আগে এমন তথ্য আসাম সরকারকে জানিয়েছিল দিল্লি।
আগেই সতর্ক করার পরও তিনসুকিয়ার খেরবাড়িতে পাঁচ বাঙালি হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আসাম সরকারকে অবিলম্বে কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে নির্দেশ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে আসামসহ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা।
কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আসামে গরিব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। গুজরাটে বিহারি খেদাও, আসামে বাঙালি খেদাও হচ্ছে।’
বৃহস্পতিবারের এই হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে উলফাকেই সন্দেহ করা হচ্ছিল। কিন্তু পরেশ বরুয়ার নেতৃত্বাধীন উলফা বিবৃতি পাঠিয়ে দাবি করে, তিনসুকিয়ার এই হত্যাকাণ্ডে তারা জড়িত নয়।
অক্টোবর মাসের প্রথমে বিস্ফোরণ ও গতকাল বাঙালি হত্যার ঘটনায় অশনি সঙ্কেত দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর, কেন্দ্র মনে করছে, নাগরিকত্ব বিলকে কেন্দ্র করে আসামে অসমিয়া ও বাঙালিদের মধ্যে যে বিভেদের সূত্রপাত হয়েছে, তাকে কাজে লাগাতে চাইছে পরেশ বড়ুয়া গোষ্ঠী-সহ আরও অনেকেই। ফলে এ ধরনের হামলা আরও বাড়তে পারে।
এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র ওই হামলার পিছনে উলফা গোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে ধরে নিলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাংশের মতে, নাগরিকত্ব বিলকে কেন্দ্র করে আসাম স্পর্শকাতর হয়ে রয়েছে। সেই সুযোগে উলফার নাম নিয়ে অন্য সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো ওই কাজ করতে পারে।
পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। অসম-অরুণাচল সীমানা বরাবর শুরু হয়েছে জঙ্গি বিরোধী অভিযান। আসাম বাঙালি ছাত্র যুব ফেডারেশন ও আরও কয়েকটি সংগঠনের ডাকে তিনসুকিয়ায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলছে বন্ধ। সূত্র: আনন্দবাজার।