জিপি নিউজঃ পরিবহন ধর্মঘটের সময় গাড়ির চালক ও শিক্ষার্থীদের মুখে ও শরীরে পোড়া মবিল লাগানো , অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় শিশু মৃত্যুসহ শ্রমিকদের বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুলিশ মহাপরিদর্শককে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে ধর্মঘটের নামে এসব ভয়ংকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের দুই ডেপুটি কমিশনার এবং পুলিশ সুপারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
পরে সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের নামে শ্রমিকরা গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর দেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করে। এ সময় বিশৃঙ্খল পরিবহন শ্রমিকরা সাধারণ চালক ও শিক্ষার্থীদের মুখে পোড়া মবিল লাগিয়ে দেয়। তারা অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় অন্তত দুই শিশুর মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে তা মঙ্গলবার হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে বুধবার হাইকোর্টে রিট দায়ের করি। সেই রিটের শুনানি শেষে আদালত উক্ত আদেশ দেন।’
সপ্তাহিক ছুটি শেষে কর্মদিবসের প্রথম দিন রোববার সকাল থেকে সারা দেশে চলা ৪৮ ঘণ্টার এ পরিবহন ধর্মঘটকে ‘নৈরাজ্য’ উল্লেখ করে সমালোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ধর্মঘটকারী শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সড়ক দুর্ঘটনার সব অপরাধ জামিনযোগ্য করা, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান বাতিল করা, সড়ক দুর্ঘটনায় গঠিত যেকোনো তদন্ত কমিটিতে ফেডারেশনের প্রতিনিধি রাখা, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি নির্ধারণ এবং সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর শ্রমিক ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নেয়, সড়ক পরিবহন আইন সংস্কারসহ আট দফা দাবি ২৭ অক্টোবরের মধ্যে পূরণ না হলে ২৮ অক্টোবর থেকে দুদিনের কর্মবিরতিতে যাবেন শ্রমিকরা।