জিপি নিউজঃ একটানা বৃষ্টির মধ্যে চট্টগ্রামে পাহাড় ও দেয়াল ধসে চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন একই পরিবারের সদস্য।
শনিবার গভীর রাতে বন্দরনগরীর আকবর শাহ থানার পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনির পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজন নিহত হন। আর বায়েজিদ থানার রহমাননগর এলাকায় দেয়াল ধসে একজন নিহত হয়েছেন।
আজ সকালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন গণমাধ্যমকে জানান, প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ের পাদদেশে দুটি বাড়ি ধসে পড়ে। এতে নূর জাহান, তাঁর মেয়ে নূর বানু ও নূর জাহানের মা জহুরা খাতুন মারা যান।
নূর জাহান আর নূর বানুর লাশ ভোরেই উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় জহুরা খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। জহুরা লক্ষ্মীপুর থেকে চট্টগ্রামে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
নূর জাহানের স্বামীর নাম নূর মোহাম্মদ। তাদের এক ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। নূর বানু সবার ছোট। তার বয়স আড়াই বছর। সবার বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
নূর মোহাম্মদ গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার রাতে বৃষ্টির মধ্যে তিনি ঘরের মালামাল সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিছু মালামাল ও তিন মেয়েকে তিনি সরিয়ে অন্য জায়গায় রেখে আসেন। সব শেষে ঘরের টিভিসহ অন্যান্য মালামাল ও স্ত্রী-শাশুড়িকে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সে সুযোগ তিনি আর পাননি। শেষবার এসে দেখেন ঘরের মধ্যে পাহাড় ধসে পড়েছে।
অন্যদিকে বায়েজিদ এলাকায় রহমাননগরে দেয়াল ধসে নুরুল আলম নান্টু নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি পেশায় একজন রিকশাচালক ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
নিহতদের প্রত্যেককে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা গত কয়েক দিন ধরেই পাহাড় থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছিলাম। মাইকিং করা হয়েছে। পুলিশ দিয়ে তাদের সরানো হয়েছে। তবু কেউ কেউ জোর করে রয়ে গেছে। পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করার জন্য এলাকার প্রভাবশালীরা দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়রা জানান, ওই ফিরোজ শাহ কলোনির পাহাড়টি কনকর্ড গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাও চেষ্টা করেছেন লোকজনকে সরিয়ে নিতে। কিন্তু অনেকেই বাড়ি ছেড়ে যেতে চাননি। এ ছাড়া স্থানীয়রা পাহাড় কেটে অবৈধ বসতি স্থাপন করার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর জহিরুল ইসলামকে দায়ী করেছেন। তবে কাউন্সিলর এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।