জিপি নিউজঃ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘বিএনপি-জামাত-সাম্প্রদায়িক জঙ্গি চক্র হচ্ছে গুজব উৎপাদন ও পুনঃউৎপাদনের সংগঠিত কারখানা। এদের কালো থাবা থেকে ফেসবুক-সামাজিক মাধ্যমকে রক্ষা করতেই হবে।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তমনা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নয়, বরং যাদের জন্য মুক্তমনা ব্যক্তিবর্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের কঠোর অবস্থান নিতে হবে।’
মন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে তথ্য অধিদফতর আয়োজিত ‘গুজব : গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
প্রধান তথ্য অফিসার কামরুন নাহারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে তথ্য সচিব আবদুল মালেক বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার বিচারের আদালত নিয়েও গুজব-মিথ্যাচার চলছে। আদালত কোথায় বসলো সেটা বিচার্য নয়, আদালত প্রকাশ্য কিনা সেটাই বিচার্য। নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েও সংশয় তৈরির জন্য গুজব-মিথ্যাচার চালাচ্ছে দেশবিরোধী গোষ্ঠী। এদের তিনি মানুষের এবং দেশের ও সমাজের শত্রু হিসেবে অভিহিত করেন।
‘এই গুজব, মিথ্যাচার, উস্কানি, তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ওপর একটি জাতীয় প্রচার অভিযান এবং সংবাদপত্র, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সকল টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ সকল বেতারে এবং অনলাইন গণমাধ্যমগুলোতে একযোগে গুজব, মিথ্যাচার, উস্কানি ও তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।’
‘একইভাবে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই ধর্মহীনতা’, ‘সমাজতন্ত্রী মানেই নাস্তিক’, ‘জয় বাংলা মানে হিন্দুয়ানী’ বা ‘বাঙালিত্বের চর্চা ধর্মবিরোধী’- এ ধরনের মিথ্যাচার চলে আসছে’ উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ‘মুক্তিযোদ্ধারা ইসলাম ধ্বংস করে ফেলছে’ তৎকালীন মুসলিম লীগ এ ধরনের মিথ্যাচার করেছে, বাঙালি তাতে কান দেয়নি।’
ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশ বিরোধী চক্রের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে মিথ্যাচার, তথ্য বিকৃতি, তথ্য ধামাচাপা দেয়া, চরিত্র হনন। নামে-বেনামে, দেশ থেকে বা বিদেশ থেকে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠি এই অপকর্মে লিপ্ত। এরা আসলে অপরাধী বলেই তারা নিজ নাম গোপন রেখে ভিন্ন নামে মিথ্যা তথ্য ছড়ায়। এ অপপ্রচার থেকে রেহাই পেতে ‘ডিজিটাল লিটারেসি’র বিকল্প নেই। অর্থাৎ জনগণকে ডিজিটাল শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।’
গুজব-মিথ্যাচারের হাত থেকে মানুষ ও সামাজিক মাধ্যমগুলোকে রক্ষার জন্যে দু’টো ছাঁকনি বসানো প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একটি প্রযুক্তিগত ছাঁকনি, অপরটি মনের ছাঁকনি। অপরাধী শনাক্ত করার জন্য প্রযুক্তিগত ছাঁকনি, আর সামাজিক মাধ্যমে যা দেখা যাবে, যাচাই না করে তাই বিশ্বাস করে বিভ্রান্ত না হবার জন্যই মনের ছাঁকনি দিয়ে আগে যাচাই, তারপরে বিশ্বাস।
তথ্যমন্ত্রী বলেন ‘ছাঁকনি বসাতে গেলেই দেশ ও সমাজবিরোধী গোষ্ঠী ‘গণতন্ত্র গেলো, গণতন্ত্র গেলো’ বলে চিৎকার শুরু করে। এই চক্র গুজব রটনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে না, বরং গুজব রটনাকারীদের দমন করতে গেলে ‘গণতন্ত্র গেলে, গণতন্ত্র গেলো’ বলে রটনাকারীদেরই প্রশ্রয় দেয়। তিনি বলেন, যাদের জন্য মুক্তমনা ব্যক্তিবর্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
সুত্র- বাসস