জিপি নিউজঃ শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার পরও সারাদেশব্যাপী বিএনপির প্রায় দু’শতাধীক নেতাকর্মিকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
আজ বিকালে নয়াপল্টনের বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই নিন্দা জানান ।
রিজভী আহমেদ বলেন, আওয়ামী সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাব এবং দেশব্যাপী জেলা ও মহানগর সদরে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে আসা ও যাওয়ার পথে সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী বিনা উস্কানিতে ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
তিনি বলেন, সরকার বিদায়ের প্রাক্কালে আতঙ্কিত হয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বিরোধী দলের কর্মসূচির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দলমন্য কিছু সংখ্যক পুলিশকে ব্যবহার করে সমগ্র পুলিশ বাহিনীকেই বির্তর্কিত করছে সরকার। পুলিশকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে তাদের ভাবমূর্তিকে চরম কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। পুলিশের ওপর জনগণের আস্থা এখন শুণ্যের কোঠায়। পুলিশ এখন আইনের লোক হওয়ার বদলে আওয়ামী লীগের লোক হওয়ার কারণে কবর থেকে উঠে আসা লাশের বিরুদ্ধে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ককটেল ছুঁড়ে মারার মামলা দেয়া হয়, বাদী আসামীকে না চিনলেও পুলিশ আসামীর বিরুদ্ধে চাঁদাবজির মামলা দেয়, ঘটনা না ঘটলেও অগ্রিম মামলা হয় থানায়, গাড়ি অক্ষত থাকলেও গাড়ি পোড়ানো ও ভাংচুরের মামলা দেয় পুলিশ, হজে থাকা লোকও এখন গায়েবি নাশকতা মামলার আসামী হচ্ছে, এসব করে সারাদেশে গায়েবি মামলা, গায়েবি কাহিনী রচনা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার পাহাড় তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এসব করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। যতই ট্রেন ও লঞ্চে চড়ুন না কেন ডুবন্ত নৌকাকে আর ভাসানো যাবে না।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটি সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মতিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ লেবার পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল । ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফ হোসেন, রমনা থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বাবু, কোতয়ালী থানা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামনু, থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম টয়, দক্ষিণ যুবদল নেতা মোঃ সানোয়ার, মোঃ ইমরান, মোঃ সাকিব, ওরিন, সোহাগ, ইলিয়াস, মিলন, জসিম, মহসিন, রাহাদ ও ইউছুফ, যাত্রবাড়ী থানা যুবদল নেতা জসিম খান, যুবদল নেতা আব্দুল ওয়াছেদ, যুবদল নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদুজ্জামান, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ সুলায়মান, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আকবর হোসেন, দক্ষিণখান থানা যুবদল সভাপতি শেখ আব্দুল্লাহ রাসেল, উত্তরখান থানা যুবদল নেতা হোসেন মোল্লা, ওমর ফারুক, মোঃ সুরুজ মিয়া, খিলক্ষেত থানা যুবদল নেতা নাজমুল, শেরেবাংলা থানা যুবদল নেতা মান্নান হাওলাদার, গুলশান থানা যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক মেহরান জাবিন ফারুক, মাসুদ পারভেজ, মোঃ রাজিব আলী রজ্জব, রুপনগর থানা যুবদল নেতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ মনির হোসেন, রতন মিয়া, শেরেবাংলা থানা যুবদল নেতা মোঃ শফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, রমনা থানা যুবদল নেতা শরিফ, মিজান, ক্যান্টনমেন্ট থানা যুবদল সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, যুবদল নেতা নুর মোহাম্মদ, শফি উল্লাহ, মাসুম, বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য এইচ এম জাফর আলী খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী, হেলাল উদ্দিন, ওয়ারী থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল, মতিঝিল থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মিজানুর রহমান, রহমত ও হেলাল, কামরাঙ্গীরচর থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইউনুস ও লিটন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবুল হোসেন, মনির হোসেন, নিউমার্কেট থানা বিএনপি নেতা মতিউর, শাহবাগ থানা বিএনপি নেতা কুতুবুদ্দিন, মামুন, ফারুক, শাহ আলম, মোক্তার, কদমতলী থানা বিএনপি নেতা জসিমউদ্দিন, মহসিন, ইউছুফ, পল্টন থানা বিএনপি নেতা আবুল হোসেন, আরমান হোসেন, মোঃ শামীম, মোহাম্মদ আলী, চকবাজার থানা বিএনপি নেতা রনি, কামরাঙ্গিরচর থানা বিএনপির নেতা মোঃ আনু, মোঃ নুরু, শিবলু, আলাউদ্দিন, রমনা থানা বিএনপি নেতা মোতালেব হোসেন রুবেল, মানিক হোসেন, মোঃ রিপন, মোঃ ফিরোজ, বংশাল থানা বিএনপি নেতা মাহবুব, গেন্ডারিয়া থানা বিএনপি সাংগঠনিক স¤ক্সাদক ওয়াসেক বিল্লাহ, কোতয়ালী থানা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন, যুবদল নেতা আলমগীর, কোতয়ালী থানা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন, যুবদল নেতা আলমগীর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পাভেল শিকদার, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্রনেতা ফজলে রাব্বি, সাইফ আলী, কদমতলী থানা ছাত্রদল নেতা আশিকুর রহমান সুজন, সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রদল নেতা মো: শিপন মাহমুদ, দোহার থানা ছাত্রদল নেতা আল আমিন, ডেমরা থানা ছাত্রদল নেতা খন্দকার মেহেদী হাসান, কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদল নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ , মোহাম্মদপুর থানা বিএনপি নেতা কাশেম, খোকন, সুমন, মিন্টু, আখতার হোসেন অভি, পল্টন থানা শ্রমিক দল নেতা রাসেল, পল্টন থানা বিএনপি নেতা আবুল হোসেন বিএনপি নেতা আরিফ হোসেন, মোঃ শাহ আলম খান, মোঃ সেলিম, সিরাজুল ইসলাম মানিক, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এর গাড়ী চালক আবুল কালাম প্রমুখ।
এছাড়াও গাজীপুরের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিএনপি’র মানববন্ধন কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিত হামলা ও গুলি চালায়। এসময় বিএনপি’র বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মরহুম আ স ম হান্নান শাহ’র পুত্র শাহ রিয়াজুল হান্নান ও কাউন্সিলর হান্নান মিয়া হান্নুসহ ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণে মহিলা দলের সাবেক সভাপতি আনোয়ারা বেগম, যুবদল নেতা সাজেদুল মোল্লাহ, সুমনসহ বেশ ২০ জনের মতো নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন।
বাগেরহাট জেলা ছাত্রদলের নেতা আরিফুল ইসলাম অনি, মহিউদ্দিন, রিয়াজ, শ্রমিক দল নেতা রিয়াজকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মেহেরপুর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আবদুর রহিম, জেলা বিএনপির নেতা আবদুল কামাল, জেলা যুবদল নেতা আবদুস সালামসহ ১১ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রিজভী আহমেদ বিএনপির পক্ষ থেকে আটক সকল নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান ।