জিপি নিউজঃ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ এবং এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আশফাক মিশুক মুনীরের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১১ সালের এই দিন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। তাদের সঙ্গে আরো তিনজন নিহত হন। ওই তিনজন হলেন চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল।
তারেক মাসুদ তার সহধর্মিণী ক্যাথরিন মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ নয় সদস্যের একটি দল নতুন ছবি ‘কাগজের ফুল’-এর লোকেশন দেখতে যান মানিকগঞ্জে। সেখান থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন ‘মাটির ময়না’র পরিচালক তারেক মাসুদ। ১৯৮৯ সালে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে ‘আদম সুরত’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন তারেক মাসুদ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৫ সালে তার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ (১৯৯৬) প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। এরপর ২০০২ সালে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ দেশের চলচ্চিত্রকে নিয়ে যায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
ক্যামেরা ‘ডিরেক্টর’ হিসেবে কাজ করে যেসব বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আশফাক মিশুক মুনীর ছিলেন অন্যতম। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিও গ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সবার কাছে মিশুক মুনীর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। তারেক মাসুদের ছবি ‘রানওয়ে’র প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন তিনি। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তাদের দু’জনকে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করে সরকার।
এদিকে, সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে সাড়ে চার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি আগামী ৮ অক্টোবর ধার্য করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করা হবে। গত ২২ জুলাই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
গত ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক রায়ে তারেক মাসুদের পরিবারকে চার কোটি ৬১ লাখ ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন। রায়ে চালক, বাস মালিক ও বীমা কোম্পানিকে তিন মাসের মধ্যে ওই অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল। পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে সংশ্নিষ্ট বাস মালিক, চালক ও বীমা কোম্পানী কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় ওই আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।