জিপি নিউজঃ ঢাকা ও এর আশেপাশে কেমিক্যাল পল্লী গঠন ও কেমিক্যাল লাইসেন্স নবায়নের জটিলতা দূর করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন কেমিক্যাল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় মতিঝিল ফেডারেশন ভবনে “FBCCI Standing Relating to Ministry of Industries ( Productivity & Related Chemical)” কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এই দাবী জানান ।
আলোচনা সভায় “এফবিসিসিআই” এর সহ- সভাপতি মোঃ মুন্তাকিম আশরাফ বলেন, ঢাকার নিমতলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের ৪ বছর ধরে তাদের ট্রেড লাইসেন্সের যে নবায়ন করা হচ্ছে না সেটা অত্যান্ত দুঃখজনক। “এফবিসিসিআই” এর আগামী পরিচালনা সভায় এ বিষয়টি নিয়ে যথাযত আলোচনা করবেন এবং সমস্যা সমাধানে সাধ্যমত চেষ্টা করবেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন ।
ডিরেক্টর ইন চার্জ মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন, দেশের শিল্প উন্নয়নের জন্য এসিড ও কেমিক্যাল অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্য। প্রত্যেকটা ছোট বড় কারখানাতে কমবেশি এসিড ও কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা হয় সুতরাং কেমিক্যাল ব্যবসার জন্য লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে না এটা মেনে নেওয়া যায় না । তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যেকে প্রতিদিনই কমপরিমানে হলেও এসিড (সাইট্রিক) খাই, আর সব এসিড বা সব কেমিক্যালই বিস্ফোরক নই এটা সরকারকে বা প্রশাসনকে জানাতে ও বুঝাতে হবে । তিনি প্রয়োজনে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় কেমিক্যাল পল্লী গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এফবিসিসিআই এর পরিচালক আলহাজ্জ আজিজুল হক বলেন, ৪ বছর ধরে কেমিক্যাল লাইসেন্সের নবায়ন করা হয় না এটা ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যান্ত হতাশাজনক ব্যাপার । তবে লাইসেন্সের নবায়নের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা লিখিত আকারে দিলে শিল্প মন্ত্রণালয় ও সরকারের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা যাবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন ।
এফবিসিসিআই এর পরিচালক, প্রীতিলতা বলেন, কেমিক্যাল ট্রেড লাইসেন্সের ধরনে যেহেতু আমদানি ও রপ্তানিকারক লেখা আছে তারপরেও কেন সরকার লাইসেন্স নবায়ন করার অনুমতি দিচ্ছে না এটা তার বোধগম্য নয় । তিনি কেমিক্যাল পল্লী গড়ার পক্ষেও অভিমত প্রকাশ করেন।
এফবিসিসিআই এর পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, বিড়ি ও সিগারেট শিল্পের জন্যও কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয় কিন্তু এই সেক্টরের ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে যে সমস্যা তা জেনে তিনি অত্যান্ত দুঃখ প্রকাশ করেন এবং পরবর্তী জেনারেল মিটিং এ ব্যাপারে তিনি আলোচনা করবেন বলেও জানান ।
এফবিসিসিআই এর পরিচালক আলহাজ্জ হাফেজ হারুন বলেন, টুথপেস্ট তৈরি করতে হলেও কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয় । প্রত্যেকটা ব্যবহারিত জিনিসই কেমিক্যাল ছাড়া তৈরি হয় না তারপরেও কেন ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না । তিনি বলেন আন্দোলন করে হলেও আমাদের এই দাবী আদায় করতে হবে ।
প্রবীণ ব্যবসায়ী ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্জ হারুন-আল-রশীদ বলেন, এসিড ও কেমিক্যাল সরবরাহ করতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাটে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করবে । তিনি আরও বলেন, এসিড কেমিক্যাল ছাড়া কোন কারখানা চলতে পারে না তারপরেও এই ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। লাইসেন্সে কেমিক্যাল লেখা থাকবে না তাহলে কিভাবে আমরা কেমিক্যাল ব্যবসা করব সৎভাবে । দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না করলে একদিন এই দেশের শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে ।
টি কে গ্রুপের কর্ণধার বিশিষ্ট কেমিক্যাল ব্যবসায়ী ও “FBCCI Standing Relating to Ministry of Industries ( Productivity & Related Chemical)” এর কো- চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা হায়দার শিবলি বলেন, একসময় বিদেশ থেকে সব ধরনের কেমিক্যাল আমদানি করতে হত ফলে দেশের একটা বিশাল অঙ্কের টাকা বিদেশে চলে যেত কিন্তু বর্তমানে আমরা কেমিক্যাল উৎপাদন করছি শুধু তাই নয় আমাদের উৎপাদিত কেমিক্যাল বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে যেখান থেকে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি । সুতরাং যে কেমিক্যাল ব্যবসা করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি সেই ব্যবসার লাইসেন্স কেন নবায়ন করা হবে না এটা মেনে নেওয়া যায় না ।
আলোচনা সভার সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ বলেন, কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ দিনের দাবী অবিলম্বে কেমিক্যাল লাইসেন্স সংক্রান্ত সকল জটিলতা দূর করে কেমিক্যাল লাইসেন্স নবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ব্যবসায়ীদের দাবী মোতাবেক কেমিক্যাল পল্লী গড়ে তুলতে হবে অন্যথায় আমরা রাজপথে সংগ্রামের মাধ্যমে আমারা আমাদের দাবী আদায় করে ছাড়ব। আজকের আলোচনা সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, “FBCCI Standing Relating to Ministry of Industries ( Productivity & Related Chemical)” এর কো-চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, কামাল আহমেদ, মোঃ মামুনুর রশিদ, মোঃ সালাম ওবায়দুল কারিম, খবির উদ্দিন খান, মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ ।
গিয়াস/জিপি নিউজ-