জিপি নিউজঃ ২০১৪ সালের পর এই প্রথম মুখোমুখি হামাস ও ইসরায়েল৷ হামলা পাল্টা হামলায় গাজা উপত্যকায় আবারো রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷
ফিলিস্তিন অধ্যুষিত গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল৷ মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু করে বুধবার সকাল পর্যন্ত চালানো এই বোমা হামলার মূল লক্ষ্য হামাস ও ইসলামিক জিহাদের স্থাপনা ছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ৷ ২০১৪ সালে ৭ সপ্তাহব্যাপী লড়াইয়ের পর এটিই ছিল দুই পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা৷
ইসরায়েলের সেনাবিহিনীর দাবি, মঙ্গলবার রাতে ৭০ টির মতো রকেট এবং বোমা ফিলিস্তিন সীমানা থেকে তাদের দক্ষিণাঞ্চলে ছোঁড়া হয়৷ ওসব বোমার ১টি বাচ্চাদের একটি স্কুলের সামনে গিয়ে পড়ে৷
এরই জবাবে গাজায় থাকা হামাস ও ইসলামিক জিহাদের ৩৫টি স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল৷ তবে ইসরায়েলের বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি৷
জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ আগে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷
সেই সহিংসতায় শতাধিক ফিলিস্তিনির প্রাণহানির পর দুপক্ষের ফের এ লড়াই শুরু হলো৷ ওদিকে গাজায় সীমান্ত বিক্ষোভে ৩০ মার্চ থেকে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি হত্যাযজ্ঞের জবাবেই ইসরায়েলে রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস ও ইসলামিক জিহাদ৷
এক বিবৃতিতে গাজার কাছে ইসরায়েলি বিভিন্ন স্থাপনা এবং বসতিতে মর্টার বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে ফিলিস্তিনের কাশেম এবং জেরুসালেম ব্রিগেড৷
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “ইসরায়েল এরকম হামলার সমুচিত জবাব দেবে এবং যারা ইসরায়েলের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তাদেরকে ভারি মাশুল গুণতে হবে৷ আমরা লক্ষ্য করছি, আমাদের বিরুদ্ধে এরকম হামলার পেছনে হামাস রয়েছে৷”
ইসরায়েলের ইন্টেলিজেন্স মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, “২০১৪ সালের পর এই প্রথম হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে৷ অপরপক্ষ থেকে যদি গোলাগুলি বন্ধ না হয়, আমাদের পাল্টা হামলার তীব্রতা বাড়বে এবং এটি পরিস্খিতির অবনতি ঘটাবে৷”
হামাস ও ইসলামিক জিহাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ৷ পশ্চিম তীরে সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দলটির নেতা মাহমুদ আব্বাসও ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন৷
তিনি বলেছেন, “ইসরায়েল গাজায় সহিংস আগ্রাসন চালাচ্ছে এবং এ অঞ্চলে শান্তি স্থাপনে তারা আগ্রহী নয়৷”
ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের সংঘাতের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘে অ্যামেরিকার রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালে বুধবার দ্রুত নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন৷
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র অ্যামেরিকার এই দূত বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের এখনই ইসরায়েলের সাধারণ জনগণের উপর হামলার ব্যাপারে (হামাসকে) তিরষ্কার করা উচিত এবং এ ঘটনার প্রতিবাদ করা উচিত৷”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ফেদেরিকা মগেরিনিও হামাসকে হামলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “কোনো অবস্থাতেই সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলা গ্রহণযোগ্য নয়৷”
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিস্থাপন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক নিকোলাই ম্লাদোনোভও হামাসের বিরুদ্ধেই শান্তিপ্রক্রিয়া ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন৷