জিপি নিউজঃ রাজধানীর আজিমপুরে নিউ পল্টন এলাকার একটি বাসায় মঙ্গলবার রাতে বাবা ও ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাহীন ইসলাম (২৫) নামের মাদকাসক্ত এক যুবক খুন হয়েছে।
এ ঘটনার শাহীনের ভাই সাইফুল ইসলাম শুভকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে শাহীন মাদকাসক্ত ছিল।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্র বলেছে, লালবাগ থানাধীন আজিমপুর ৪১ নিউ পল্টনের ১১তলা বাড়ির পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটটি শাহীনের বাবা নুর ইসলামের।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় নেশার টাকার জন্য ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে বাবা-ভাইয়ের উপর চড়াও হয় শাহীন। ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে তারা বাসার নীচে নেমে আসেন। সেখানেও বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে শাহীনের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে বাবা ও ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় শাহীন।
পরে ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম শুভ তাকে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহীনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শাহীনের বুকে তিনটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শাহীনের এক প্রতিবেশী জানান, শাহীনের বাবা নুর ইসলাম গাউছিয়া মার্কেটের ফুটপাতে জুতার ব্যবসা করেন। তার দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে শাহীন বড়। সে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকে আসক্ত ছিল। নেশার টাকা না পেলেই সে পরিবারের লোকজনের উপর চড়াও হতো।
শাহীনকে নেশা ছাড়াতে একাধিকবার মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। গত দুই মাস আগেও তাকে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ আগে সে আর মাদক সেবন করবে না মর্মে পরিবারের লোকজনের কাছে ওয়াদা করে। এরপর তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয়।
কিন্তু এসেই সে আবার মাদকের পিছনে ছুটে। নেশার টাকার জন্য উৎপাত শুরু করে। সে নেশার টাকার জন্য তার স্ত্রী আছমা আক্তারের উপর অত্যাচার শুরু করে। তার অত্যাচার সইতে না পেরে গত তিন দিন আগে স্ত্রী আছমা ছেলে আয়াত ও মেয়ে সাফাকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান।
মঙ্গলবার রাতে নেশার টাকার জন্য বাক-বিতন্ডার একপর্যায়ে বাবা ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে মারা যায় শাহীন।
এদিকে হাসপাতাল সূত্র বলেছে, সাইফুল হাসপাতালে এসে দাবি করেন শাহীন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এ সময় হাসপাতালে আসা সাইফুলের শ্যালক রিমন হোসেন বলেন, শাহীনকে তার বাবা ও ভাই মিলে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। এ সময় হাসপাতাল থেকে পুলিশ সাইফুলকে আটক করে।
লালবাগ থানার ওসি শুভাষ কুমার পাল বলেন, শাহীন মাদকাসক্ত ছিলেন। হত্যার অভিযোগে তার ভাই সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন শাহীনের বাবাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।