জিপি নিউজঃ সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে আদালত যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তার বেশির ভাগই অসত্য। তিনি বলেন, মামলার শুনানিতে যে সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে তার সাথে এ অভিযোগের কোনো মিল নেই।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সভাপতির কক্ষের সামনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি আরো জানান, আজই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির আইনজীবীদের আরেকটি মিটিং হবে। পরে খালেদা জিয়ার আপিল ও জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করা হবে।
এর আগে আজ সকাল ৯টায় এ ব্যাপারে হাইকোর্টে বৈঠকে করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এই বৈঠকে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, দুদক আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এই মামলায় অন্য আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ আরো চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সরকারি এতিম তহবিলের টাকা এতিমদের কল্যাণে ব্যয় না করে পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়াসহ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামিরা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধ করেছেন বলে আদালতের রায়ে বলা হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ‘এ ঘটনায় বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ মামলার ছয়জন আসামির প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে লাভবান হয়েছেন। তারা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।’
প্রায় ১০ বছর আগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে থাকার সময় এই মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলায় খালেদা জিয়াসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
সেখানে অভিযোগ করা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দেয়া হলেও, তা এতিম বা ট্রাস্টের কাজে ব্যয় করা হয়নি। বরং সেই টাকা নিজেদের হিসাবে জমা রাখার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
কিন্তু আসামিপক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে বর্তমানে ওই অর্থ ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে এবং তা সুদে-আসলে বেড়ে ছয় কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৬৩২ পৃষ্ঠা রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য তিন হাজার পৃষ্ঠার কার্টিজ পেপার আদালতে জমা দেন খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। কিন্তু গতকাল সোমবার এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।