জিপি নিউজঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চারজনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসময় একজনের ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে এ রায় দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ময়মনসিংহ-বগুড়া রুটের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫)। এছাড়া সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) সাত বছরের দণ্ড ও একলাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে মামলার আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে পাঁচ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলের পর মামলাটি বিচারের জন্য পরদিন ১৬ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর আদালত এই অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। গত ২৩ জানুয়ারি এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মোট ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকেরা ধর্ষণ করে এবং বাসেই তাকে হত্যার পর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে তার মৃত দেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় তরুণী হিসেবে তার লাশ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার দুই দিন পর রূপার বড়ভাই হাফিজুর রহমান নয়া দিগন্ত পত্রিকায় মধুপুরে অজ্ঞাত যুবতীর লাশ উদ্ধারের খবর দেখে মধুপুর থানায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি রক্তাক্ত লাশের ছবি ও সেলোয়ার কামিজ দেখে শনাক্ত করেন যে এই অজ্ঞাত যুবতীই তার আদরের ছোট বোন। ৩১ আগস্ট রূপার মরদেহ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।