জিপি নিউজঃ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ একটি সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়ে তুলতে যুবসমাজের শক্তি ও সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে বলেন, যুবসমাজকে অবশ্যই অপসংস্কৃতির প্রভাব মুক্ত হয়ে স্বাধীন চিন্তার অধিকারী হতে হবে। কষ্টার্জিত স্বাধীনতার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে তাদের মানবিক ও উদার হতে হবে।
এসময় রাষ্ট্রপতি ১৯৭১ সালে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সকলকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
যুবসমাজ জাতির জন্য একটি অপার সম্ভাবনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুবকদের শক্তি, সামর্থ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আজকাল বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসহিষ্ণুতা, উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ, মৌলবাদের মত নেতিবাচক কর্মকান্ড জাতি উদ্বেগের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করছে। আমি মনে করি, এর উদ্ভাব ও বিকাশ হয়েছে মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতি চর্চার অভাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পাঠদানের স্থানই নয়, এটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পাদপীঠ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, পরিপূর্ণ ও বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা অত্যন্ত তাৎপর্যপূণ।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এসময় শিক্ষার্থীদের মুক্তচিন্তা, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা, জাতি গঠন কার্যক্রম, সমসাময়িক চিন্তা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক কার্যক্রমসহ অন্যান্য সৃজনশীল কর্মকান্ডের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সৃজনশীল কর্মকান্ড শিক্ষার্থীদের কেবল মাত্র দক্ষই করে গড়ে তোলে না, কূপমন্ডুকতার বেড়াজাল থেকে বের করে এনে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনাকেও পরিপুষ্ট করে।
তিনি বলেন, আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সহাবস্থান আমাদের হাজার বছরের সুমহান ঐতিহ্য, এই ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করেই আমাদের সমাজ ও সভ্যতা এগিয়ে চলেছে।
বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ ধারণার কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের এই ধারণাকে বাস্তবায়নে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করে বলেন, জাতি আশা করে নতুন প্রজন্ম ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ, ইতিহাস রীতিনীতে সমৃদ্ধ হয়ে জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আবদুল হামিদ সকলকে ক্ষুদ্র স্বার্থ ছেড়ে পরিকল্পিতভাবে পরিশ্রম করে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে এবং বিশ্বে নেতৃত্বের অবস্থানে পৌঁছানোর আহ্বান জানান।
‘ইতিবাচক হও, আত্মশক্তিতে ভরসা রাখো’ আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন গ্রাজুয়েট ও গবেষকদের উদ্দেশে বলেন দেশ ও মানুষের প্রতি তাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
কল্পবিজ্ঞান ও উপন্যাসিক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হারুন-উর-রশিদ আসকারি।
সুত্র- বাসস