জিপি নিউজঃ চট্টগ্রাম আদালত ভবন থেকে ফরিদা ইয়াসমিন সুমি (৩৫) নামে মিয়ানমারের এক মহিলা গুপ্তচরকে আটক করেছে পুলিশ। ডিবির সোর্স পরিচয়ে ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে গুপ্তচরের কাজে লিপ্ত।
মঙ্গলবার বিকালে নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সোর্স পরিচয়ে প্রতারণার সন্দেহে সাদা পোশাক পরা ওই নারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবীরা। কিন্তু রাতে জিজ্ঞাসাবাদেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী প্রতারণার কথা স্বীকার করলেও অনেক সত্য লুকিয়ে যাচ্ছেন। তার সাথে কথা বলার পর মনে হয়েছে সে এদেশের নাগরিক নয়।
সে মিয়ানমারের নাগরিক। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাও সে রপ্ত করেছে। তার চলাফেরা, জীবন যাত্রা, আচার-আচরণ রহস্যজনক। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রতারক সুমি মিয়ানমারের গুপ্তচর। ডিবির সোর্স হিসেবে ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে দাপটের সাথে চট্টগ্রামে ঘোরাফেরা করে সে গুপ্তচরের কাজে লিপ্ত রয়েছে। তার নাম-পরিচয়ও আসল নয়। নাম পরিচয় পাল্টিয়ে সে অবস্থান করছে।
নগরীর এমন কোন থানা নেই যেখানে সুমি যায়নি। ভুয়া কার্ড ব্যবহার করে আদালতে সাধারণ বিচার প্রার্থীদের বিভ্রান্ত করেও সুমি টাকা পয়সা হাতিয়ে নিত। মঙ্গলবার বিকালেও প্রতারণার সময় আইনজীবীরা তাকে আটক করে কোতোয়ালী থানায় সোপর্দ করে। তার ব্যাপারে গভীর ভাবে তদন্ত হওয়া দরকার।
কোতোয়ালী থানার ডিউটি অফিসার এএসআই খালেদা নাসরিন জানান, আদালতের হাজতখানার সামনে হাজতিদের স্বজনদের ভয়ভীতি ও সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলে টাকা হাতানোর সময় এক আইনজীবীর সাথে সুমির বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সে নিজেকে ডিবির সোর্স পরিচয় দেয়। যা চ্যালেঞ্জ করে সুমিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় আনজীবীরা।
খালেদা নাসরিন জানান, সুমির কাছ থেকে উদ্ধার করা ভিজিটিং কার্ডে সে নিজেকে লালখান বাজার পুলিশ ও ডিবি সোর্স হিসেবে উল্লেখ করেছে। তার বাবা মরহুম আমির হোসেন সওদাগর এবং মা আছমা বেগমের নামও ভিজিটিং কার্ডে লেখা আছে। কিন্তু এ ধরণের কোনো ডিবির সোর্স ও মা-বাবার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ নারী জন্ম সূত্রে বাংলাদেশী না ভিনদেশী তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাকে আজ আদালতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এ এ এম হুমায়ুন কবির বলেন, ডিবির সোর্স এই পরিচয়ে ভিজিটিং কার্ড বানানোর কোন সুযোগ নেই। ডিবির নাম ভাঙ্গিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অন্যায় কাজে জড়িতদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। শীঘ্রই আমরা এ ব্যাপারে অভিযানে নামব।