জিপি নিউজঃ বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ রবিবার রাতে ঢাকায় তার হোটেলে বিএনপি-র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন।
বৈঠকের পর বিএনপি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভারতও যে চায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরম্পরা অক্ষুণ্ণ থাক এবং সুষ্ঠু ও স্বাধীন নির্বাচন সম্পাদিত হোক, মিস স্বরাজ আলোচনায় সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তাদের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। ৪৫ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে দুপক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হয়।
বিএনপি-র প্রতিনিধিদলে খালেদা জিয়া ছাড়াও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক ক্যাবিনেট মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ছাড়াও পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্কর, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ও মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা আলোচনায় অংশ নেন।
বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, “দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের বিষয়টি খালেদা জিয়া বৈঠকে তুলে ধরেছেন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেগুলো শুনেছেন।”
“তিনি (মিস স্বরাজ) আমাদের বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত প্রত্যাশা করে তার প্রতিবেশী দেশগুলোতেও যাতে গণতন্ত্র বজায় থাকে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় এবং নির্বাচন কমিশনও যাতে স্বাধীন ভাবে কাজ করে।”
মি আলমগীর আরও জানান রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টিও তাদের আলোচনায় উঠেছিল এবং ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপিকে সরাসরি বলেছেন যে এই সঙ্কট নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন।
“যারা বাংলাদেশে এসেছে তারা যেতে নিরাপদে দেশে ফেরত যেতে পারে সেজন্য তারা চাপ অব্যাহত রেখেছে এবং ভারত আশা করে তারা নিরাপদেই দেশে ফেরত যেতে পারবে”, মিস স্বরাজকে উদ্ধৃত করে জানান বিএনপি মহাসচিব।
এদিকে এই বৈঠকের আগে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আজ বিজেপি ভারতের ক্ষমতায় আছে – স্বভাবতই তারা চাইবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধানের মাধ্যমেই দুদেশের সম্পর্কের উন্নতি হোক। আমি নিশ্চিত কংগ্রেস ভারতের ক্ষমতায় থাকলে তারাও একইভাবে ভাবত।”
কিন্তু ভারতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি কি বাংলাদেশের বিএনপি-কে দল হিসেবে পছন্দ করে?
এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে মি চৌধুরী বলেন, “কে কাকে পছন্দ করে বা না-করে সেটা আমাদের ততো ভাবনার বিষয় নয়।”
“বিজেপি চাইবে তাদের দেশের স্বার্থগুলো দেখে সম্পর্কের উন্নয়ন হোক – আবার বিএনপিও একইভাবে বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষা করে সম্পর্কের উন্নয়নে জোর দেবে। সেই জায়গায় ঐকমত্য হওয়াটাই বেশি জরুরি।”
সুত্র- বিবিসি