জিপি নিউজঃ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর হেফাজতে ইসলামের ধৃষ্টতা বেড়েছে , তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ ।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে মন্থরতা, প্রধান বিচারপতির বক্তব্য এবং মৌলবাদী-সম্প্রদায়িক অপশক্তির উল্লস্ফল’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর হেফাজতে ইসলামের ধৃষ্টতা বেড়েই চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য সর্ম্পকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে হেফাজত উল্লসিত হয়েছে। এরপরই রাতের অন্ধকারে ভাস্কর্য অপসারণ ও পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। এমন নাটকটি দেশবাসী দেখেছেন। এর ফলে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক ভাস্কর্য ভাঙ্গার হুমিক প্রকাশে দিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজমে ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে নাস্তিক আখ্যা দিয়ে তার সরকারকে উৎখাতের জন্য রাজধানীতে বর্বর তান্ডব চালিয়েছিল। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকেও তারা বলেছিলেন নাস্তিক। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, জামায়াত-হেফাজতকে আর ছাড় দেয়া হবে না। তখন হেফাজতে নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অগ্নি সংযোগ ও সন্ত্রাসের জন্য শতাধিক মামলা হয়েছে। অথচ এরপর হেফাজতের মতো উগ্র মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি সরকার হঠাৎ কেন নমনীয় হয়েছে এর ব্যাখ্যা সরকারকে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামকে ছাড় দিয়ে সরকার ভূল করছেন জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, ৭১’র পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে জামায়াত-হেফাজতসহ পাকিস্তানপন্থী তাবৎ সংগঠনগুলো। জামায়াত হেফাজতকে যত ছাড় দেয়া হোক না কেন ভোটের রাজনীতির সমীকরণে পাকিস্তানপ্রেমীরা কখনও আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না, এ বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারকদের অনুধাবন করতে হবে। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ৩৯ জন নিরীহ মানুষ, ৬ জন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য হত্যাসহ যাবতীয় সন্ত্রাসের জন্য হেফাজতে নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তর করতে হবে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, দেশে হেফাজতে ইসলাম ও মৌলবাদী সংগঠনগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তারা এতই বেপরোয়া হয়ে উঠছে যে, একদিন খোদ প্রধানমন্ত্রীতেই তারা হিজাব পড়িয়ে ছাড়বে। তারা ভাস্কর্য ভাঙ্গচুর ও উচ্ছেদে প্রকাশ্যে নেমেছে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে যে ভাস্কর্য উচ্ছেদ করা হলো তার যথাযথ ব্যখ্যা প্রধান বিচারপতিকে দিতে হবে। তার কি দূর্বলা রয়েছে তাও দেশবাসী জানতে চায়। তাকে মনে রাখতে হবে যে, আমরা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কাজ করি। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি সামসুল হুদা, শিল্পী হাশেম খান, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী প্রমুখ।