জিপি নিউজঃ আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ, বিদ্রোহী ও প্রেমের কবি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী। কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সারা দেশে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে নানা আয়োজনে। রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত কবির সমাধি ছেয়ে গেছে বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসার ফুলে ফুলে।
‘চির উন্নত মম শির’ বলে কাজী নজরুল ইসলাম সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ও কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। গেয়েছেন মানবতার জয়গান।
কাজী নজরুল পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ জন্মগ্রহণ করেন। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসাবে সেটা ছিল ১৮৯৯ সালের ২৪ মে।
অভাবী পরিবারে বেড়ে ওঠা নজরুল জীবিকার দায়ে লেটো দলের বাদক, রেল গার্ডের খানসামা, রুটির দোকানের শ্রমিক—নানা রকম পেশা বেছে নিয়েছিলেন শৈশব ও কৈশোরে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। সাংবাদিকতাও করেছেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে পথে নেমেছেন। শাসকের কোপানলে পড়েছেন, কারারুদ্ধ হয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীপ্তিতে ভাস্বর বাংলা সাহিত্যের ভুবনে নজরুল স্বতন্ত্র ভাষারীতি ও শব্দের প্রয়োগে এক নতুন কাব্যধারার সংযোগ করেছিলেন। একইভাবে বাংলা গানের ক্ষেত্রেও তিনি নতুন মাত্রা সংযোজন করেছিলেন। উত্তর ভারতীয় রাগ সংগীতের দৃঢ় ভিত্তির ওপর রচনা করেছিলেন আধুনিক বাংলা গানের সৌধ। প্রবর্তন করেছিলেন বাংলা গজল।
বাণী ও কর্মসূচি: জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে ঢাকায়। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এদিন সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নজরুল ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। কবির ১১৮তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদবিরোধী সৈনিক নজরুল’।
নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এ উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল, কুমিল্লার দৌলতপুর ও চট্টগ্রামে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হবে।