জিপি নিউজঃ চট্টগ্রামে চালের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। প্রতিমাসে কেজিতে ৫ টাকা এবং বস্তায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে। গত পাঁচ মাসে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে চালের দাম। সেই সঙ্গে নাভিশ্বাস উঠছে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটের চালের বাজারে গত মঙ্গলবার বিকালে চাল কিনতে আসেন চান্দগাঁও আবাসিক ‘এ’ ব্লকের বাসিন্দা কাজী ফারুক। তিনি বলেন, ‘প্রতি ২৫-২৬ দিন পর আমার ৫০ কেজির এক বস্তা চাল কিনতে হয়। আমি মিনিকেট লিচু মার্কা চাল কিনি। কিন্তু পাঁচ মাস ধরে চালের বস্তা প্রতি ২০০-২৫০ টাকা দাম বেড়েই চলেছে।’ তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ মাস আগে এ চালের বস্তা কিনেছি এক হাজার ৫২০ টাকায়, ১৭ মে মঙ্গলবার সে চালের দাম বেড়ে ২ হাজার ৬৮০ টাকা হয়েছে। বাজারে অন্যান্য জিনিসের দামও বৃদ্ধির দিকে। কিন্তু আমার আয় না বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি।’
দিনমজুরদের অবস্থা আরও করুন। কবির নামে এক রিকশাচালক জানান, দিনে রিকশা চালিয়ে আয় হয় তিনশ থেকে চারশ টাকা। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছয়জন। দিনে চাল কিনতেই চলে যায় প্রায় দেড়শো টাকা। গরিব মানুষের যা আয় রোজগার সব চাল কিনতেই শেষ হচ্ছে বলে জানান তিনি।
চাক্তাই চালপট্টি ও পাহাড়তলী চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ৫০ কেজির মোটা চালের বস্তা পাইকারি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২০০ টাকায়। গত পাঁচ মাস আগে তা বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ২০০ টাকায়। পায়জার চাল বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ৪৫০ টাকায়। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৯০ টাকায়। বর্তমানে কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭২০ টাকায়, পাঁচ মাস আগে বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ৬৫০ টাকায়। এভাবে সবরকম চালের ৫০ কেজির বস্তা প্রতি বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ বা তারও বেশি হয়েছে। আর খুচরা হিসেবে প্রতি বস্তার ওপর আরও ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে চালের দাম।
বাজারে এখন চলতি আউশ মৌসুমের মোটা চাল খুচরা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৫ টাকায়। বর্তমানে এটাই বাজারে সর্বনিম্ন চালের দর। এরপর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন মূল্যে চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৫৭ টাকা।
চট্টগ্রামের বাজারে আউশ জাতের মোটা চাল, দিনাজপুরি পায়জার, মিনিকেট এসব চালের চাহিদা বেশি। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খাবারে চিনিগুড়া চালের চাহিদা রয়েছে। এ চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৫০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি না থাকা ও হাওরাঞ্চলে ফসলহানির কারণে মিল মালিক ও কৃষকরা চাল বেচাকেনা করছেন রেখে-ঢেকে। এ কারণে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে মূল্য। শুল্ক কমিয়ে এখনই আমদানির সুযোগ না দিলে চালের মূল্য আরও বাড়বে।