জিপি নিউজঃ বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য সীমান্তে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিনই আসছে অসংখ্য রোহিঙ্গা। তবে তারা বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করলেও ঘিরে রেখেছে বিজিবি।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, বিজিবির চোখ এড়িয়ে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক রোহিঙ্গা প্রতিদিনই দেশে প্রবেশ করছে।
কক্সবাজারের টেকনাফের দমদমিয়া সীমান্তে এখন রয়েছে ৩২ রোহিঙ্গা।
বিজিবির টেকনাফের কমান্ডিং অফিসার আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ”সীমান্তের ভেতরে যেহেতু গোলাগুলি হচ্ছে, তাই তাদের এখনি ফেরত পাঠানো কঠিন। তাই সন্ধ্যার পর তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।”
প্রতিদিনই রাতের আধারে ছোট ছোট নৌকায় করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে। বিজিবি মাঝপথে পেলেও তাদের আবার ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে।
বিজিবি জানিয়েছে, গতকাল রাতে ৭২জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর সন্ধ্যায় ফেরত পাঠানো হয়েছে ৪৭৫ জনকে।
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে হাজার খানেক রোহিঙ্গা অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানে তাদের ঘিরে রেখেছে বিজিবি। পরিস্থিতি শান্ত হলেই তাদের আবার ফেরত পাঠানো হবে বলে বিজিবি বলছে।
মিয়ানমারের রাখাইনে সম্প্রতি নতুন করে অস্থিরতা দেখা দেয়ার পর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজারের কুতুপালং ও পালংখালী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছেন বহু রোহিঙ্গা।
এদের একজন মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ডেকিবুনিয়া গ্রামের দীন মোহাম্মদ বলছিলেন, “আমাদের দ্যাশে বহুত গোলাগুলি চইলতেছিল, মানুষ মারা গেছে অনেক। দিনে চারবার পাঁচবার করি গোলাগুলি চইলছে। একদিন অপেক্ষা করে দেখছি, কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয় নাই।”
“সেইজন্য বাড়িঘর ছেড়ে প্রাণ হাতে নিয়া পালাই আসছি। পরিবার নিয়া কয়েক মাইল রাস্তা পায়ে হেটে, তারপর ছোট একটা খাল পার হয়ে আসছি আমরা।”
বাংলাদেশ আশ্রয় না দিলে, কি করবেন দেশে ফিরে গিয়ে, এমন প্রশ্ন শুনে দীন মোহাম্মদের কথা থেমে যায়।
খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে উত্তর দেন, “আমাদের দ্যাশের অবস্থা ভালো হলে চলি যাব। এখন যদি পাঠাই দেয়, একটু অপেক্ষা করি দেখবো আরকি। আমাদের দ্যাশের কী পরিস্থিতি দেখবো, যদি ভালো হয়, তাইলে চলি যাবো।”
২৪শে অগাস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর ওই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই রাতের পর থেকে এ পর্যন্ত ৯৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
আরও সহিংসতার আশঙ্কায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদী ও স্থল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে।
সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ অংশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীদের গুলি করার ঘটনাও ঘটেছে।