জিপি নিউজঃ আদালতের সাজা কার্যকর করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘একজন লন্ডনে বসে নাটাই ঘোরাচ্ছে, সে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী। আল্লাহ দিন দিলে আমরা ওই সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীকে ফিরিয়ে আনব এবং বাংলার মাটিতে বিচার কার্যকর করব। আমরা দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না।’
শনিবার সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করে বলেন, পলাতক ও বিদেশে থাকা এক সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গত ১০ বছরে দেশ ও জনগণের কল্যাণে অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে।
‘বাংলাদেশ এই সম্মান ও স্বীকৃতি ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যাবে। এই সম্মান অবশ্যই ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না,‘ যোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি সবাইকে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা আসন্ন ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে আরও বলেন, ‘নৌকা মানে উন্নয়ন। অন্যদিকে ধানের শীষ মানে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও আগুন সন্ত্রাস।’
শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের মনোনয়ন দেয়ায় বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেন। সেই সাথে তিনি জানান, এবার বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অর্থ নিতে তাদের মনোনয়ন নিলাম করেছিল।
‘বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তারা দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংস এবং সব অর্জন নস্যাৎ করে দেবে। কারণ তারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না,’ বলেন তিনি।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশকে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের দেশ হিসেবে চিত্রিত করেছিল দাবি করে তিনি বলেন, ‘তারা দেশের মানুষের মর্যাদা নষ্ট করে দিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর অপকর্মের কারণে ২০০৮ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহতের নামে তারা মানুষ পুড়িয়ে মেরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
‘তারা শুধু হত্যা, দুর্নীতি, অর্থপাচার, অস্ত্র চোরাচালান ও লুটপাটই জানে। তারা এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে থাকা খালেদা জিয়ার প্রিয় ব্যক্তিরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। ওই মামলায় তিনি সাজা পেয়ে এখন জেলে আছেন। আওয়ামী লীগ বা আমি তার জেলে যাওয়ার জন্য দায়ী নই,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
দেশের সেবা করার আরেকটি সুযোগ দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘ইনশাল্লাহ নৌকা প্রতীক আগামী নির্বাচনে জয়ী হবে। এই নৌকা বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে।’
আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই জনগণের কল্যাণে কাজ করে বলে দাবি করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ তরুণদের মেধা ও যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। ‘এই লক্ষ্য বিবেচনায় নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, গবেষণা ও তথ্য সম্পাদক আফজাল হোসেন প্রমুখ।
সুত্র-ইউএনবি-