জিপি নিউজঃ ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলতে চায় বাংলাদেশের কিশোরীরা । দক্ষিণ এশিয়ায় মেয়েদের ফুটবলে সেরা দুই দল বাংলাদেশ ও ভারত। সাফ কিংবা অন্য যে কোনো টুর্নামেন্ট হোক না কেন, শিরোপার লড়াই এ দুই দলেই সীমাবদ্ধ থাকে। মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলেও এর ব্যত্যয় হয়নি। বছর না ঘুরতেই আবারো অনূর্ধ্ব-১৫ সাফের ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-ভারত। ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামবে এ দুই প্রতিবেশী।
মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের এটি দ্বিতীয় আসর। প্রথম আসর বসেছিল গত বছর ডিসেম্বরে, ঢাকায়। সেবার ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে মেতেছিল বাংলাদেশের কিশোরীরা।
ম্যাচের ৪১ মিনিটে ডিফেন্ডার শামসুন্নাহারের করা একমাত্র জয়সূচক গোলে সাফ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল লাল-সবুজ কন্যারা। মারিয়া, মনিকা, তহুরাদের সামনে এবার আরেকটি শিরোপা জয়ের হাতছানি। সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত করার উজ্জ্বল সম্ভাবনা।
আসরের সেরা দুই দলই খেলছে ফাইনালে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ফুটবলবোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শকরা এমন ফাইনালের কথাই বলেছিলেন। ছয় জাতির টুর্নামেন্টে এবার বাংলাদেশ খেলেছে ‘বি’ গ্রুপে। ভারত ছিল ‘এ’ গ্রুপে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪-০ গোলের জয় দিয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে উঠে আসে সেমিফাইনালে। শেষ চারে স্বাগতিক ভুটানকে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে উঠে বাংলাদেশ।
শ্রীলংকার বিপক্ষে ১২-০ গোলের জয় দিয়ে এবারের আসর শুরু করে ভারত। গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে ভুটানকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে জায়গা করে নেয় শেষ চারে। গ্র“পপর্বের ধারাবাহিকতা ধরে রাখে সেমিতেও। সেখানে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশের মতো টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে ভারত।
শিরোপা জয়, ট্রফি নিয়ে ঘরে ফেরা ছাড়া আর কোনো ভাবনা নেই বাংলাদেশের। টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আগেই এমন কথা বলেছেন লাল-সবুজদের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। কাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও একই কথা বললেন তিনি, ‘গত তিনটি ম্যাচে যেভাবে খেলেছি, ফাইনালেও সেভাবেই খেলতে চাই। নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলে ম্যাচ বের করে আনতে চাই। নিজেদের সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। শিরোপা জেতার লক্ষ্যেই আমরা এখানে এসেছি।’
ভুল বলেননি ছোটন। গত ডিসেম্বরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ফের শিষ্যদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন তিনি। ভুটানে আসার আগে দীর্ঘ সাত মাস কঠোর অনুশীলন করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ভুটানে আসার আগে হংকংয়ে একটি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট খেলেছে তারা। সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে সাফে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ।
কোচের পরিকল্পনা ভুটানে যথাযথ বাস্তবায়ন করছে মারিয়া-বাহিনী। ম্যাচের পর ম্যাচ জিতে চলেছে। গোলবন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে প্রতিপক্ষকে। গ্র“পপর্ব থেকে সেমিফাইনাল- তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ২২ গোল দিয়েছে বাংলার কিশোরীরা। হজম করেনি একটি গোলও। ফাইনালেও ভালো কিছু করার লক্ষ্য তাদের।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে কাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দা বলে, ‘এখন আমরা ফাইনালের মঞ্চে নামার অপেক্ষায়। ভারতের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিয়ে শিরোপা জিততে চাই। শুরুতেই গোল করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার পরিকল্পনা নিয়ে আমরা মাঠে নামব। ভারত খুবই শক্তিশালী দল। ওদের খেলোয়াড়রা অনেক অভিজ্ঞ। তবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমরা নিজেদের সম্মান ধরে রেখে আবারও ট্রফি জিততে চাই। ট্রফি নিয়েই দেশে ফিরতে চাই।’
