জিপি নিউজঃ রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেনাবাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের ইস্যুতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এতে রাখাইনে সহিংসতার নিন্দা জানানো হয়েছে। বুধবার এ আলোচনা হলেও ১৫ সদস্যের এ পরিষদ কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় নি বৈঠক সম্পর্কে।
তবে বৃটিশ রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ রাইক্রোফট বলেছেন, বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইনে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন পরিষদের সদস্যরা। এই বৈঠক আহ্বান করেছিল বৃটেন। কিন্তু রাখাইন সঙ্কটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জড়িত হওয়ার বিষয়ে ঘোর বিরোধিতা করছিল চীন। নিরাপত্তা পরিষদে এ আলোচনা হলেও পরবর্তীতে আর কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা এ নিয়ে তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি। তবে সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ অধিবেশনে বিশ্ব নেতারা যখন সমবেত হবেন সেখানে এ ইস্যুটি আলোচনায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃটিশ রাষ্ট্রদূত রাইক্রোফট বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এখনও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচিকে সমর্থন করে, মিয়ানমারে সরকার পরিচালনায় যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রাইক্রোফট বলেন, আমাদের অনেকেই তাকে সমর্থনকারী মিত্র। অনেক আগে থেকেই তার অগ্রগতির অনুসারী এসব মানুষ। আমরা চাই তিনি সঠিক কথা বলুন। একটি সমঝোতার পথ বের করুন। মিয়ানমারের সব মানুষের মঙ্গলের জন্য এই সমস্যা সমাধান করে উত্তেজনা প্রশমন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এতে বলা হয়, রাখাইনে এক সপ্তাহ ধরে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সহিংসতায় কমপক্ষে ১৮ হাজার ৫০০ রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। ওই সহিংসতায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১০ জন। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রবেশে বাধা দিলেও হাজার হাজার রোহিঙ্গা ছুটছেন বাংলাদেশের দিকে।
শুক্রবার নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের ৩০ টি ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলা চালায় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থি আরাকান রোহিঙ্গা সলভেশন আর্মির সদস্যরা। এর জবাবে সেনাবাহিনী তীব্র অভিযান শুরু করে। সব মিলে ওইদিনই নিহত হন ৮৯ জন। এর মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা রক্ষাকারী। বাকিরা রোহিঙ্গা। এর পর থেকে সেনাবাহিনী নৃশংস নিপীড়ন শুরু করেছে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে। তারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে। গুলি করে হত্যা করছে মানুষ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে তা দেখলে গা শিউরে ওঠে। কোথাও দেখা যায়, জীবন্ত মানুষকে বসিয়ে রাখা হয়েছে পিঠমোড়া করে। পিছন থেকে এসে মাথা পিছনে টেনে ধরে গলা কাটা হচ্ছে যুবকের। এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে, এগুলো কবে, কোথা থেকে ধারণ করা হয়েছে।