জিপি নিউজঃ ভারতে গত নভেম্বরে হঠাৎ করেই ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট অচল বলে ঘোষণা করে দেয়ার প্রায় নয় মাস পরে জানা গেছে বাতিল হয়ে যাওয়া প্রায় সব নোটই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ফিরে এসেছে।
নোট বাতিলের ঘোষণার সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তারপরে অন্যান্য অনেক বিজেপি নেতা মন্ত্রীই দাবি করেছিলেন যে অর্থনীতিতে তিন লাখ কোটি টাকার জাল এবং কালো টাকা ঘুরছে।
নোটবন্দীর পরে সেই কালোটাকা আর জাল নোট উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
সেই টাকা ব্যাঙ্কের কাছে আর ফেরত আসবে না – এমনটাও দাবি করা হয়েছিল।
অথচ এখন দেখা যাচ্ছে চালু থাকা নোটের প্রায় ৯৯ শতাংশই ফিরে এসেছে।
বুধবার প্রকাশিত রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বার্ষিক রিপোর্টে এই তথ্য দেয়া হয়েছে।
পাঁচ শ’ আর হাজার টাকার নোটই ছিল ভারতের অর্থনীতির সিংহভাগ – প্রায় ৮৫ শতাংশ।
সেই সব নোট রাতারাতি বাতিল হয়ে যাওয়ায় চরম অসুবিধায় পড়েছিলেন সাধারণ মানুষ।
তাদের প্রায় দুই মাস ধরে দীর্ঘ লাইন দিয়ে পুরনো নোট বদল করে নতুন নোট যোগাড় করতে হয়েছে।
বড়-ছোট ব্যবসা যেমন মার খেয়েছে, তেমনই কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ।
কিন্তু চালু থাকা নোটের প্রায় পুরোটাই ফেরত আসায় বোঝা যাচ্ছে যে সেগুলো কালোটাকা বা জাল নোট ছিল না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ নিজের কাছে জমানো কালো টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যে জমা দেবেন না, এটাই স্বাভাবিক।
তাই কালোটাকা আর জালনোট উদ্ধারে সরকার যে দাবী করেছিল, তা যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে, তা বলছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেও একই মত দিচ্ছেন, যে নোটবন্দীর ওই সরকারী সিদ্ধান্ত চরম ব্যর্থ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই তথ্য যে নিশ্চিত ভাবেই নরেন্দ্র মোদির সরকারকে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে ফেলেছে, সেই মন্তব্যও করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
তবে পরিসংখ্যান সামনে আসার পরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা বলছেন, নোট বাতিল করার ওই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র কালোটাকা আর জালনোট উদ্ধার করার জন্য ছিল না।
নোট বাতিলের ফলে যেমন নগদের ব্যবহার কমেছে, তেমনই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় নগদের যোগানও বেড়েছে।
সূত্র : বিবিসি