জিপি নিউজঃ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকার সারা বিশ্বের কাছে মুসলিমবিরোধী মনোভাব প্রমাণ করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধনে দেওয়া বক্তব্যে রিজভী এসব অভিযোগ করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। যদি সেখানে জঙ্গিরা হামলা করত, তাহলে সেই অজুহাতে রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণ করা হতো। কিন্তু সেখানে তো কোনো জঙ্গি হামলা হয়নি। তবে কেন শিশু, শিক্ষক, নিরীহ নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মিয়ানমার সরকার পাশবিকতা করছে। অথচ তাদের কেউ কিছু বলছে না। কেন বলছে না, আজকে রোহিঙ্গারা মুসলমান বলে? তাদের (রোহিঙ্গা) একদিকে সমুদ্র, আরেকদিকে শয়তান। মুসলমান বলে তাদের কি বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই?
আজকে কোথায় মানবাধিকারকর্মীরা? রোহিঙ্গা ইস্যুতে দেখলাম না তো তাদের কথা বলতে? এই যে জাতিগতভাবে নির্মূল, যে অন্যায় অভিযান তাদের বিরুদ্ধে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করা হচ্ছে না।
আজকে বাংলাদেশের সীমান্তে তারা (রোহিঙ্গা) আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের প্রতি আন্তর্জাতিক যে সাহায্য ছিল, সেই সাহায্য বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে না। আজকে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বকে দেখাতে চাচ্ছে তারা মুসলিমবিরোধী, বলেন রিজভী।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা আরো বলেন, রোহিঙ্গারা মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করছে, একটা জাতিকে আজ নির্মূল করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার নির্বিকার, পাশবিকভাবে তাদের এই মৃত্যু দেখছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের দেশে পৌঁছে দেওয়া হোক।
ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের রায় প্রসঙ্গে সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আজকে প্রধান বিচারপতির জন্য কাঠগড়া তৈরি করছেন? যে জনতার কাঠগড়ার কথা বলছেন, সেই জনগণ তো আপনার পক্ষে নেই। আপনি তো জনগণকে আগেই তালাক দিয়েছেন। আপনার জনগণ হচ্ছে ছাত্রলীগ, আইন প্রশাসন। যারা গুম করছে, হত্যা করছে, তাদের আদালতে প্রধান বিচারপতির বিচার করবেন?
কয়লা ধুলে ময়লা যায় না—প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে সরকারের একজন মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে রিজভী বলেন, পুরো আওয়ামী লীগটাই তো কয়লা। আপনারা পদত্যাগ করুন, তাহলে হয়তো কয়লা কিছুটা পরিষ্কার হতে পারে।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ফরিদা মনি শহীদ উল্লাহ, এম জাহাঙ্গীর আলম, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন সেলিম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমত উল্লাহ, খালেদা ইয়াসমিন, বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জিনাপের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, কৃষক দলনেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, ওলামা দলের নেতা শাহ মাসুম বিল্লাহ।